ফুটবলে মুকুট ধরে রাখার প্রত্যয়

“এর আগেও অনেকবার আমরা বলেছি কিন্তু কোনো ফলাফল দিতে পারিনি। এবার একটু চুপ থাকতে চাই; আমরা আসল কাজটা করে দেখাতে চাই” - নাবীব নেওয়াজ জীবনের কথাগুলো বলে দিচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমসে বাংলাদেশ ফুটবল দলের লক্ষ্যটা।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2016, 08:52 AM
Updated : 2 Feb 2016, 01:33 PM

এসএ গেমসের ফুটবলের মুকুট ধরে রাখার প্রত্যেয়র কথা জানালেন ফুটবলাররা; ১৯৯৯ সালের কাঠমাণ্ডু গেমসের পর ২০১০ সালে যেটা উঠেছিল বাংলাদেশের মাথায়। টানা পাঁচ ম্যাচে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ১৩ গোল করে কোনো গোল হজম করতে হয়নি। ফাইনালে আফগানিস্তানকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে সোনার মুকুট জিতেছিল বাংলাদেশ।

সেই হাসিটা আগামী শুক্রবার ভারতের গুয়াহাটি-শিলংয়ে শুরু হতে যাওয়া দ্বাদশ গেমসে ধরে রাখা বাংলাদেশের জন্য কঠিন। কিন্তু ফেরানো জরুরি। সর্বশেষ সাফ গেমসের গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার পর দেশের মাঠে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপেও ব্যর্থ মামুনুলরা। এসএ গেমসের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া অনূর্ধ্ব-২৩ দলের গোল্ড কাপের পারফরম্যান্সও ছিল হতাশাজনক; গ্রুপ পর্ব থেকে বেজেছিল বিদায় ঘণ্টা।

সেই হতাশা এবার কাটিয়ে ওঠার প্রত্যয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন খেলোয়াড়, কোচ সবাই। ফরোয়ার্ড জীবন বললেন, “লক্ষ্য অবশ্যই ভালো কিছু আছে। মুখ ফুটে অনেক কিছু বলি কিন্তু কিছুই পারি না। ভেতরে ভেতরে প্রতিজ্ঞা আছে। এবার অবশ্যই কিছু করে দেখাতে চাই।”

“টিম স্পিরিট ভালো। জাতীয় দলের অনেকে আছে। সিনিয়র-জুনিয়র মিলে টিমটা ভালো”, আরও আত্মবিশ্বাসী শোনায় সিনিয়র কোটায় এসএ গেমসের দলে ঠাঁই পাওয়া এই ফরোয়ার্ডের কণ্ঠ।

তিন সিনিয়র কোটায় জীবনের সঙ্গে আছেন মিডফিল্ডার জামাল ভূইয়া ও অধিনায়ক রেজাউল করিম। কোচ গনসালো মরেনো ফরোয়ার্ডে জীবনের সঙ্গে শাখাওয়াত রনিকে চেয়েছিলেন; কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। রনির অভাব পূরণের সঙ্গে নিজেকে শতভাগ মেলে ধরার সুযোগটি তাই কাজে লাগাতে উন্মুখ জীবন।

গোল্ড কাপে বাহরাইনের যুবাদের আটকে দেওয়া ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় রুবেল হোসেন নিজের প্রথম এসএ গেমস নিয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত। তবে গত ২২ জানুয়ারি গোল্ড কাপের ফাইনালের পর শুরু হওয়া এসএ গেমসের প্রস্তুতিতে কিছুটা কমতি থেকে যাওয়া ভাবাচ্ছে তাকে।

“গোল্ড কাপ শেষ করেই আমরা এসএ গেমসের প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রস্তুতির জন্য আরেকটু সময় পেলে; প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারলে আরও ভালো হতে। তবে আমাদের লক্ষ্য গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমি-ফাইনালে আগে ওঠা। এরপর পদক ধরে রাখা।”

“প্রথম এসএ গেমস নিয়ে একটু রোমাঞ্চিত। যশোরের গোল্ড কাপে ম্যাচ সেরা হওয়াটাও অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। সুযোগ পেলে অবশ্যই ভালো কিছু করব। আমার বিশ্বাস, আমাদের দলটাও এবার খুব ভালো করবে”, যোগ করেন তরুণ এই মিডফিল্ডার।

রুবেলের সুরে সুর মিলিয়েছেন জুয়েল রানাও। জাতীয় দলে খেলা এই তরুণ ফরোয়ার্ড আশাবাদী হয়ে ওঠার কারণ জানাতে বলেন, “আমরা জাতীয় দলের সাত জন আছি। দলটাও ভালো। সাফ আর বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের ব্যর্থতা কাটাতে সব কিছু দিয়ে চেষ্টা করব আমরা।”

দুঃসময়ে ঘুরপাক খাওয়া দলের ওপর আস্থা হারাচ্ছেন না সহকারী কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানী। কিভাবে মুষড়ে পড়া শিষ্যদের উজ্জীবিত করছেন, সেটাও জানালেন।

“ছেলেদের বলেছি, গোল্ড কাপে যা হয়েছে ভুলে যাও। ছেলেরাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা মুকুট ধরে রাখার জন্য সবকিছু করবে। ওদেরকে আমি চিনি; ওরা নিজেরাও অনুতপ্ত। আমার বিশ্বাস, এসএ গেমসে ওরা সেরাটা নিংড়ে দেবে।”

মেয়েদের প্রস্তুতি নিয়েও খুশি কোচ গোলাম রব্বানি ছোটন। ছেলেদের ‍তুলনায় প্রস্তুতির জন্য বেশি সময় পাওয়ায় রূপার পদকে চোখ রাখছেন তিনি।

“প্রস্তুতি ভালোই হয়েছে। গত নভেম্বর থেকে আমরা অনুশীলন করছি। গতবার আমরা ব্রোঞ্জ পেয়েছি; এবার লক্ষ্য সেটাকে ছাড়িয়ে যাওয়া।”