বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির এথিক্স কমিটি ব্লাটারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছে। এই কমিটিই গত বৃহস্পতিবার ৭৯ বছর বয়সী এই সুইস নাগরিককে সব ধরনের দায়িত্ব থেকে ৯০ দিনের জন্য নিষিদ্ধ করে।
একই দিন মহা সচিব জেরোম ভালকে ও সহ-সভাপতি মিশেল প্লাতিনিকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
প্লাতিনি ‘সময় মতো যথাযথ প্রক্রিয়ায়’ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
নিষিদ্ধ হওয়া তিন ফুটবল কর্তাই অবশ্য কোনো ধরনের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।
ব্লাটারের বন্ধু ও পরামর্শক ক্লাউস স্টলকার বলেন, “তিনি (ব্লাটার) এরই মধ্যে ফিফার আপিল কমিটির কাছে আপিল করেছেন। তিনি তার অবস্থানেই লড়বেন। তিনি নিশ্চিত যে, তিনি দোষী প্রমাণিত হবেন না।”
ব্লাটারের অনুস্থিতিতে ফিফার ভারপ্রাপ্ত সভাপতির কাজ চালাচ্ছেন সংস্থাটির সবচেয়ে বেশি সময়ের সহ-সভাপতি এবং আফ্রিকার ফুটবল কনফেডারেশনের প্রধান ইসা হায়াতু।
সুইস কর্তৃপক্ষ ব্লাটারের বিরুদ্ধে গত মাসে ফৌজদারি তদন্ত শুরু করার পর ফিফার এথিক্স কমিটি জুরিখে এ সপ্তাহে বৈঠকে বসে।
সুইস কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ৭৯ বছর বয়সী ব্লাটার ‘ফিফার জন্য নেতিবাচক’ এমন চুক্তি করেছেন এবং ইউরোপিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মিশেল প্লাতিনিকে ‘অবৈধ উপায়ে অর্থ’ দিয়েছেন।
এথিক্স কমিটি প্লাতিনির বিরুদ্ধেও নয় বছর আগে ২০ লাখ ইউরো নেওয়া নিয়ে তদন্ত করছে। ৬০ বছর বয়সী সাবেক এই ফুটবল তারকা ব্লাটারের উপদেষ্টা হিসেবে তখন কাজ করেছিলেন।
আর ৫৫ বছর বয়সী ভালকের বিপক্ষে অভিযোগ, তিনি বিশ্বকাপের টিকেট বিক্রি থেকে লাভবান হয়েছিলেন। ভালকে আগে থেকেই বাধ্যতামূলক ছুটিতে ছিলেন।
ভালকের আইনজীবী জানান, তার মক্কেল বিশ্বাস করেন, সব ঘটনা সামনে এলে ‘মিথ্যা অভিযোগ’ থেকে মুক্ত হবেন তিনি।
গত মে মাসের শেষের দিকে পঞ্চম মেয়াদে ফিফার সভাপতি নির্বাচিত হন ব্লাটার। কিন্তু জয়ী হওয়ার চার দিন পরই ফিফার দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন ১৭ বছর ধরে সংস্থাটির সভাপতির পদে থাকা ব্লাটার।
২৯ মে ফিফার নির্বাচনের দুই দিন আগেই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাত শীর্ষ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে সুইস পুলিশ।
আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ফিফার সভাপতি নির্বাচন। নতুন সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার দিনই ব্লাটারের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
অনেকেই মনে করেন, ব্লাটারের উত্তরসূরি হওয়ার ক্ষেত্রে উয়েফা প্রধান প্লাতিনি অনেকটাই এগিয়ে আছেন। ফ্রান্সের সাবেক ফুটবলার এখনও ফিফা সভাপতি নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছেন। উয়েফার সমর্থনও পাচ্ছেন তিনি। ইউরোপের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি আগামী সপ্তাহে জরুরি সভা ডেকেছে।