সান্তিয়াগোর জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোরে দুটো গোলই হয় ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে। এদুয়ার্দো ভারগাসের গোলে এগিয়ে যায় কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়নরা। আর দারুণ ফর্মে থাকা আলেক্সিস সানচেস ১৫ বছরের মধ্যে ব্রাজিলের বিপক্ষে চিলির প্রথম জয় নিশ্চিত করেন।
২০০০ সালে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বেই নিজেদের মাঠে ব্রাজিলকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল কোপা আমেরিকার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চিলি। এরপর এই ম্যাচের আগে ১৪ বার মুখোমুখি হয়েও ব্রাজিলকে হারাতে পারেনি তারা। গত বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডেও হোর্হে সামপাওলির চিলিকে টাইব্রেকারে বিদায় করে দেয় স্বাগতিক ব্রাজিল।
চোটের শঙ্কা ঝেড়ে ফেলে সানচেস ও আর্তুরো ভিদাল খেলতে নামায় শুরুতেই আক্রমণে এগিয়ে থাকে কোপা আমেরিকার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চিলি। কোপা আমেরিকার ফাইনালের শুরুর ১১ জনের ১০ জনকেই মাঠে নামান কোচ।
ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে ভারগাসের সরাসরি শট ঠেকিয়ে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক জেফারসন।
মার্সেলো দিয়াসের দূরপাল্লার শট ব্রাজিল গোলরক্ষক জেফারসন ঠেকানোর পর স্বাগতিকদের ভারগাসের আরেকটি শট পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। এরপর ব্রাজিল একটু একটু করে গুছিয়ে উঠতে থাকলেও আক্রমণভাগে বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড নেইমারের অভাবটা ঠিকই টের পায় দলটি।
প্রথমার্ধে হাল্ক, অস্কার চিলির রক্ষণে গিয়ে খেই হারানোয় গোলরক্ষক ক্লাওদিও ব্রাভোকে সে অর্থে কোনো পরীক্ষাই দিতে হয়নি।
প্রথমার্ধে এগিয়ে যাওয়ার সেরা সুযোগটি পেয়েছিল চিলিই। তবে ৪২তম মিনিটে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে নেওয়া সানচেসের জোরাল শট বাঁ পোস্টে লাগে।
৫৫তম মিনিটে আরও একবার হতাশ হতে হয় চিলিকে। মাউরিসিও ইসলার শট জেফারসনকে ফাঁকি দিলেও বল লাগে দূরের পোস্টে।
৬৮তম মিনিটে ভিদাল হয়ে বল পেয়ে যান মার্ক গনসালেস। কিন্তু এই মিডফিল্ডার গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। চার মিনিট পরই অবশ্য চিলির হতাশা কাটে। ফার্নান্দেসের ফ্রি-কিকে পা ছুঁইয়ে লক্ষ্যভেদ করে সমর্থকদের উল্লাসে ভাসান ভারগাস।
ব্রাজিল সমতায় ফেরার দারুণ সুযোগ হারায় ৭৭তম মিনিটে; উইলিয়ানের ক্রস প্রতিপক্ষের পোস্টের মুখে পেয়েও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন অনুজ্জ্বল হাল্কের বদলি হিসেবে নামা রিকার্দো অলিভিয়েরা।
শেষ দিকে ভিদাল-সানচেসের দারুণ নৈপুণ্যে জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা। ৯০তম মিনিটে একজনকে কাটিয়ে ভিদালকে বল বাড়িয়ে বক্সের মধ্যে প্রতিপক্ষের গোলমুখে ছুটে যান সানচেস। বায়ার্ন মিউনিখের মিডফিল্ডারের কাছ থেকে বল ফেরত পেয়ে দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় গোল করেন আর্সেনালের এই তারকা ফরোয়ার্ড।
২০১৪ বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ায় গতবার বাছাই পর্বে খেলতে হয়নি ব্রাজিলকে। দীর্ঘ সময় পর মূল পর্বে ওঠার লড়াইয়ে ফেরাটা তাই সুখকর হলো না কার্লোস দুঙ্গার দলের।
দক্ষিণ আমেরিকার ১০টি দলের মধ্যে শীর্ষ চারটি দল সরাসরি খেলবে ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে। আর পঞ্চম স্থানে থাকা দলটিকে প্লে-অফ খেলতে হবে ওশেনিয়া অঞ্চলের দলটির সঙ্গে।
তবে জয় দিয়েই বিশ্বকাপ বাছাই শুরু করেছে দক্ষিণ আমেরিকার অপর পরাশক্তি উরুগুয়ে। লা পাসের উচ্চতা জয় করে বলিভিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়েছে অস্কার তাবারেসের দল।
দুই তারকা ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেস ও এদিনসন কাভানির অনুপস্থিতিতে গোল দুটি করেন দুই ডিফেন্ডার মার্তিন কাসেরেস ও দিয়েগো গদিন।
বাররানকিয়াতে পেরুকে একই ব্যবধানে হারাতে কলম্বিয়াকে জয় করতে হয়েছে উচ্চ তাপমাত্রাও।
নিজেদের মাঠে তিওফিলো গুতিয়েরেস ৩৬তম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন। ম্যাচের যোগ করা সময়ে ব্যবধান দ্বিগুন করেন এদউইন কারদোনা।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বের অন্য ম্যাচে দেলরিস গনসালেসের একমাত্র গোলে ভেনেজুয়েলাকে হারিয়েছে প্যারাগুয়ে।