পিছিয়ে পড়েও বার্সেলোনার জয়

চোট পেয়ে ছিটকে পড়া লিওনেল মেসির অনুপস্থিতিতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম জয় পেয়েছে বার্সেলোনা। ‘ই’ গ্রুপের ম্যাচে নিজেদের মাঠে বায়ার লেভারকুজেনের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও জিতেছে লুইস এনরিকের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2015, 08:56 PM
Updated : 30 Sept 2015, 07:21 AM

জার্মানির ক্লাবটির বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানের জয়ে বার্সেলোনার গোল দুটি করেন সের্হি রবের্তো ও লুইস সুয়ারেস।

গ্রুপের অন্য ম্যাচে বাতে বরিসভের কাছে ৩-২ গোলে হেরেছে ইতালির দল এএস রোমা।

মঙ্গলবার রাতে কাম্প নউয়ে প্রথম আক্রমণটি করে লেভারকুজেনই। করিম বেলারবির ক্রস থেকে বাঁ পায়ের শটে দ্বিতীয় মিনিটেই মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেনকে পরীক্ষায় ফেলেন হাভিয়ের এর্নান্দেস।

শুরুর আক্রমণের ঝাপটা সামলে বার্সেলোনা প্রথম সত্যিকারের সুযোগ তৈরি করে ষষ্ঠ মিনিটে। নেইমারের দারুণ ক্রসে ইভান রাকিতিচের হেড ঠেকিয়ে সেবার দলকে বাঁচান লেভারকুজেনের গোলরক্ষক।

চার মিনিট পর আবার বার্সেলোনার জন্য হতাশা। এবার লুইস সুয়ারেসের ক্রস থেকে সান্দ্রো রামিরেসের বাঁ পায়ের জোরালো শট ঠেকিয়ে দেন বের্নড লেনো।

লিওনেল মেসিবিহীন বার্সেলোনার আক্রমণভাগকে ঠেকাতে খুব একটা সমস্যা হচ্ছিল না লেভারকুজেনের। সুযোগ পেলেই পাল্টা আক্রমণে স্বাগতিক শিবিরে ভীতি ছড়াচ্ছিল তারা। ১৯তম মিনিটে এমনই একটি আক্রমণ থেকে অল্পের জন্য শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি কেভিন কামপল।

তিন মিনিট পর আর হতাশ হতে হয়নি লেভারকুজেনকে। জার্মানিতে জন্ম নেওয়া তুরস্কের মিডফিল্ডার হাকান কালাহানোগ্লুর কর্নারে খুব কাছ থেকে হেড করে বল জালে পাঠান কিরিয়কিস পাপাদোপোলোস।

২২তম মিনিটে পিছিয়ে পড়লেও শিরোপাধারীরা খুব একটা পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না। উল্টো ৩৬তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়ে যান বেলারাবি। বিপজ্জনক জায়গায় থেকেও সরাসরি টের স্টেগেনের দিকে শট নিয়ে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি।

প্রথমার্ধের শেষ দিকে অথিতিদের রক্ষণের ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করে বার্সেলোনা। ৩৯তম মিনিটে নেইমারের শট বারে লেগে ফিরলে জোরালো শট নেন সান্দ্রো। কিন্তু গোল লাইনের সামনে থেকে কোনোমতে প্রচেষ্টাটি ব্যর্থ করে দেন পাপাদোপোলোস।

দুই মিনিট পর রাকিতিচের ফ্রি-কিক ঠেকিয়ে লেভারকুজেনের ত্রাতা লেনো।

মেসির অনুপস্থিতির সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেনি জার্মানির ক্লাবটি। গোলের জন্য মরিয়া স্বাগতিকদের আক্রমণের মুখে রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলেনি তারা। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা ম্যাচে যথেষ্ট সুযোগ তৈরি করে তারাও।

৫০তম মিনিটে বেলারাবির ক্রস বারের ওপর দিয়ে মেরে ব্যবধান বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন মেক্সিকোর ফরোয়ার্ড এর্নান্দেস।

দুই মিনিট পর রাকিতিচের পাস থেকে শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি সান্দ্রো। ৫৭তম মিনিটে জটলা থেকে নেইমারের জোরালো শট অল্পের জন্যে লক্ষ্যে না থাকায় ব্যর্থ হয়ে যায় বার্সেলোনার আরেকটি আক্রমণ।

৬০তম মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন বার্সেলোনার অধিনায়ক আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। তার বিদায়ে মাঝমাঠে শক্তি হারায় স্বাগতিকরা। ইনিয়েস্তার বিদায়ের ৫ মিনিট পর বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি-কিক পেলেও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড নেইমার।

৭১তম মিনিটে কর্নার থেকে সমতা ফেরানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন জেরার্দ পিকে। সরাসরি গোলরক্ষক বরাবর হেড করেন বার্সেলোনার এই ডিফেন্ডার। চার মিনিট পর বিপজ্জনক জায়গায় বল পেলেও ঠিকভাবে শট নিতে পারেননি নেইমার- আরেকটি সুযোগ হাতছাড়া হয় বার্সেলোনার।

অবশেষে ৮০তম মিনিটে হতাশা ঘোচে বার্সেলোনার। সুয়ারেসের শট কোনোমতে লেভারকুজেনের গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিয়েছিলেন; কিন্তু পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ছুটে এসে বল জালে পাঠান রবের্তো।

দুই মিনিট পর কাম্প নউকে উল্লাসে মাতান সুয়ারেস। মুনির এল হাদ্দাদির পাস থেকে দারুণ শটে লেনোকে পরাস্ত করেন উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার।

তিন মিনিটের মধ্যে দুই গোল করার পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি স্পেনের দল বার্সেলোনাকে। ৮৭তম মিনিটে মুনির সহজ সুযোগ হাতছাড়া না করলে স্বাগতিকদের জয়ের ব্যবধান আরও বড় হতে পারতো। 

এই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে বার্সেলোনা। ৩ পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে বরিসভকে পেছনে ফেলে দুই নম্বরে রয়েছে লেভারকুজেন। ১ পয়েন্ট নিয়ে সবার নিচে রয়েছে রোমা।