গুলশানে কূটনীতিক পাড়ার এক ক্যাফেতে সন্ত্রাসী হামলার তিনদিন পর সোমবার নিজের ফেইসবুক পাতায় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার এই আহ্বান এসেছে।
তিনি লিখেছেন, “এই সন্ত্রাসীরা শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছে। এমন আরও অনেক আছে। এরা আপনার প্রতিবেশী হতে পারে, আত্মীয় হতে পারে, ছেলে হতে পারে।
“আমাদের দেশকে নিরাপদ রাখবার জন্য আমাদের প্রত্যেককে সতর্ক প্রহরার দায়িত্ব নিতে হবে। ধর্মের নামে মিথ্যে বলে আমাদের যুব সমাজের মগজ ধোলাই এর প্রক্রিয়াকে প্রতিহত করা অন্য যে কোনো কিছুর চেয়ে জরুরি। এ কাজে আমাদেরকে একতাবদ্ধ হতে হবে।”
ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে একদল অস্ত্রধারী ঢুকে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর শনিবার সকালে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে রেস্তোরাঁর নিয়ন্ত্রণ নেয় নিরাপত্তা বাহিনী।
ওই ঘটনায় ‘হামলাকারী’ যে পাঁচজনের ছবি সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ আইএসের বরাতে প্রকাশ করেছে, তার মধ্যে একজনকে আওয়ামী লীগের এক নেতার ছেলে রোহান ইবনে ইমতিয়াজ বলে শনাক্ত করেছেন ক্ষমতাসীন দলটির আরেক নেতা।
রোহান নিখোঁজ জানিয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের উপ-মহাসচিব এস এম ইমতিয়াজ খান (বাবুল) গত ৪ জানুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় জিডি করেন।
তার ছয় মাসের মাথায় গুলশানের জঙ্গি হামলার পর হামলাকারী হিসেবে রোহানের নাম ও ছবি আসছে, যদিও নিহতদের মধ্যে সে নেই বলে পরিবারের দাবি।
এ বিষয়ে সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, “দুঃখজনক যে কিছু লোক আবারও আওয়ামী লীগের উপর অবহেলার আরোপ আনছেন। গত তিন বছরে ব্লগার ও বিদেশিদের উপরে হামলায় অংশগ্রহণকারী প্রায় সকল খুনিকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। আমাদের সরকারের গত সাত বছরে প্রায় প্রতি মাসেই অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করেছি।
“এমন প্রতিটি উদ্ধারে ব্যর্থতায় আজকের এই হামলার মতো কোন হামলা হত। সরকারকে ধন্যবাদ যে, এ রকম হয়নি।”
বিদেশি অতিথিদের প্রতি বাঙালির ‘আতিথেয়তার সংস্কৃতিকে’ হামলার লক্ষ্য করা হচ্ছে বলেও মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে জয়।
“বিদেথি অতিথির প্রতি আতিথেয়তা আমাদের সংস্কৃতির অন্যতম উজ্জ্বল নিদর্শন। এই সন্ত্রাসীরা এটি বন্ধ করতে চায়। আমরা তাদের সফল হতে দিতে পারি না। সকল ব্যক্তি ও ধর্মকে বাংলাদেশ সবসময় স্বাগত জানাতে প্রস্তুত আছে।”
জয় তার পোস্টের শুরুতেই লিখেছেন, “ভাবতে চেষ্টা করছিলাম কী লিখব, কিন্তু কোনো শব্দ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এটি ভয়ানক, বর্বরোচিত হামলা। এই হত্যাকারীরা মুসলমান নয়। সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নেই।”
হত্যার শিকার ব্যক্তিদের, বিশেষ করে যে পুলিশ কর্মকর্তারা সন্ত্রাসীদের থামাতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি ‘গভীর সমবেদনা’ জানিয়েছেন জয়।