আশা জাগাচ্ছে নতুন ব্যাকটেরিয়া

মসুরের শিকড়ে গুঁটি (নডিউল) সৃষ্টিকারী একটি নতুন প্রজাতির উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানী হারুন অর রশিদ।

ফয়জুল সিদ্দিকীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2013, 03:46 AM
Updated : 22 July 2013, 07:43 AM

তিনি বলছেন, এ ব্যাকটেরিয়া উৎকৃষ্টমানের জীবাণুসার তৈরিতেও ভূমিকা রাখতে পারে।

‘জেনেটিক ডাইভারসিটি অব রাইজোবিয়া নডিউলেটিং লেনটিলস’ বিষয়ে জার্মানিতে গবেষণা করতে গিয়ে বাংলাদেশ থেকে সংগৃহীত মসুর গাছে এই ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পান তিনি।

ড. হারুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই ব্যাকটেরিয়াটি  রাইজোবিয়াম স্পিসিসের অন্তর্গত।

সম্প্রতি ‘সিস্টেমেটিক অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড মাইক্রোবায়োলজি রিসার্চ’ জার্নালে তার গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়।

‘ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব ব্যাকটেরিয়াল ট্যাক্সনোমি’ ইতোমধ্যে নতুন এই ব্যাকটেরিয়ার নামকরণেরও অনুমতি দিয়েছে হারুন অর রশিদকে।

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলছেন, বিভিন্ন দেশে মসুর শিকরে যেসব ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়, নতুন এই অণুজীব গাছের জন্য তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি উপকারী।

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ

“বাংলাদেশে মসুর ফসলের এ ব্যাকটেরিয়াটি ৯৫% পর্যন্ত  নাইট্রোজেন সংগ্রহ করতে পারে,  যা অন্যান্য দেশে পাওয়া ব্যাকটেরিয়ার তুলনায় অনেক বেশি।”

হারুন অর রশিদ বলেন, রাইবোজম ব্যাকটেরিয়া মূলত মসুর ফসলের শিকড়ে নডিউল তৈরি করে। এর  মাধ্যমে গাছ ইউরিয়া সারের বিকল্প হিসাবে নাইট্রোজেন গ্রহণ করে, যা ফলন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

“এ ব্যাকটেরিয়ার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য এবং মসুর ফসলের বৃদ্ধির উপর তাদের প্রভাব পরীক্ষায় দেখা যায় এটি  উৎকৃষ্টমানের জীবাণুসার তৈরিতেও ভূমিকা রাখতে পারে।”

আবিস্কৃত ব্যাকটেরিয়াটি নিয়ে ২০০৯ সালে কাজ শুরু করেন বিনার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হারুন। তুলনার জন্য বাংলাদেশসহ জার্মানি, তুরস্ক ও সিরিয়া থেকে মসুর ফসলের শিকড়ে নডিউল সৃষ্টিকারী বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া সংগ্রহ করেন। এরপর ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ থেকে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ জিন আলাদা এবং ৪৫০টি সিকোয়েন্সিং করে দেখা যায়, এটি সম্পূর্ন নতুন একটি প্রজাতি।

ওই ৪৫০টি জিন সিকোয়েন্স যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন (এনসিবিআই)’ জিনব্যাংকে জমা রয়েছে বলে জানান তিনি।