উখিয়ায় হিন্দু শরণার্থীর লাশ উদ্ধার, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ

কক্সবাজারের উখিয়ায় এক সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ দুই সহোদর হিন্দু শরণার্থীর একজনের লাশ উদ্ধার হয়েছে।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2017, 08:01 PM
Updated : 24 Sept 2017, 04:05 PM

রবীন্দ্র পাল (৪২) নামে মিয়ানমার থেকে আগত এই ব্যক্তিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।

উখিয়া থানার ওসি মো. আবুল খায়ের শনিবার রাতে বলেন, পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী খাল থেকে সকালে রবীন্দ্র পালের লাশ উদ্ধার করা হয়।

“তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন না থাকলেও মুখমণ্ডল বিকৃত করা হয়েছে।”

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের মধ্যে সহিংসতার মুখে সেখান থেকে এই মুসলিম জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কয়েকশ হিন্দুও পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে।

উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের কাছেই একটি এলাকায় ওই সব হিন্দু শরণার্থীদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কুতুপালং হিন্দু শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া নিখিল চন্দ্র পালের এই ছেলে রবীন্দ্র পাল ও নীরেন্দ্র পাল এক সপ্তাহ আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন রোহিঙ্গাদের শিবিরে ঢুকে।

ওসি খায়ের বলেন, স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ সকালে রবীন্দ্র পালের লাশ উদ্ধার করলেও পরিচয় নিশ্চিত হতে পারছিল না।

পরে স্বজনরা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে গিয়ে তার লাশ শনাক্ত করেন বলে পূজা উদযাপন পরিষদ উখিয়া উপজেলা কমিটির সভাপতি স্বপন শর্মা রনি জানান।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মিয়ানমার থেকে পালিয়ে উখিয়ার কুতুপালং এলাকায় আশ্রয় নেওয়া কতিপয় রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীর কাছে সেদেশে টাকা পাওনা ছিল রবীন্দ্র পালের। ওই টাকার জন্য এক সপ্তাহ আগে রবীন্দ্র পাল ও তার ভাই নীরেন্দ্র পালসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া ১১ জন কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে যান।

“ওই টাকা নিয়ে কথার এক পর্যায়ে দেনাদার রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীরা তাদের জিম্মি করে রাখে। এসময় হিন্দু শরণার্থীদের মারধরসহ নানা নির্যাতন চালানো হয়। এক পর্যায়ে কৌশলে নয়জন পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও রবীন্দ্র পাল ও তার ভাই নীরেন্দ্র পাল নিখোঁজ ছিল।”

রবীন্দ্র পালের লাশ পাওয়া গেলেও নীরেন্দ্রর বিষয়ে এখনও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

মিয়ানমারে পাওনা টাকা নিয়ে মুসলিম রোহিঙ্গা শরণার্থীরা রীবন্দ্র পালকে হত্যা করেছে অভিযোগ করে দায়ীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা।

ওসি খায়ের বলছেন, “পুলিশ এ বিষয়ে নানাভাবে খোঁজ খবর নিচ্ছে। ঘটনাটি তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”