বুধবার ঠাকুরগাঁও শহরে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আজকে চালের দাম আকাশচুম্বি হয়ে গেছে। মানুষ হাহাকার করছে; চাল কিনতে পারছে না; অথচ সরকারের মন্ত্রীরা জোর গলায় বলছেন চালের কোনো সঙ্কট নেই।
“বাংলাদেশে চালের সঙ্কট আওয়ামী লীগ সরকার তৈরি করেছে বলেই তা মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।”
দুই দফা বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি চালের মজুদ তলানিতে নেমে আসায় সরকার তিন মাস আগে আমদানির উদ্যোগ নেয়।
সরকারি-বেসরকারি পর্যায় মিলিয়ে গত আড়াই মাসে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি হলেও বাজারে চালের দাম বাড়ছে, যার পেছনে মিল মালিকদের কারসাজিকে দায়ী করে আসছে সরকার।
সরকারি হিসেবেই মোটা চালের দাম গত এক মাসে বেড়েছে ১৮ শতাংশ, এক বছরে বেড়েছে ৫০ শতাংশ। এখন বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোনো মোটা চাল নেই।
শুধু চালের দাম নয়; প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষের পক্ষে এখন জীবনযাপন করা খুব কষ্ট হয়ে গেছে, বলেন ফখরুল।
রোহিঙ্গা বিষয়ে ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকারের প্ররোচনায় লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকে নির্যাতন-নিপীড়ন ও হত্যা করে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে।
ফখরুল বলেন, সমগ্র বিশ্ব যখন রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলছে এবং মিয়ানমার সরকারকে তথা সু চিকে ধিক্কার দিচ্ছে, সে সময় আওয়ামী লীগের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে।
“এখন আওয়ামী লীগ সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে, কথা বলছে। কিন্তু আপনারা কোনো ব্যবস্থা করতে পারেননি।”
অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সেই সাথে সমগ্র বিশ্বে চাপ সৃষ্টি করতে হবে যেন মিয়ানমার সরকার বাধ্য হয়ে রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়, বলেন ফখরুল।
দুপুরে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার কমিউনিটি সেন্টারে বন্যাদুর্গত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ঢেউটিন বিতরণ শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মির্জা ফখরুল।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল বাসিত আঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, এজিএম সামসুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে ঠাকুরগাঁওয়ে বন্যাদুর্গত ও ক্ষতিগ্রস্ত ২০০ পরিবারের মাঝে এক বান্ডিল করে ঢেউটিন বিতরণ করা হয়।