পান্না ধর্ষণ: নেত্রকোণা হাসপাতালের আরএমও বদলি

নেত্রকোণার কিশোরী পান্না ধর্ষণ ও আত্মহত্যার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বদলির কয়েকদিন পর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককেও বদলি করা হলো।

নেত্রকোণা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Sept 2017, 05:18 PM
Updated : 14 Sept 2017, 05:19 PM

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোস্তাফিজুর রহমানের বদলির আদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেওয়া হয়েছে বলে জানান নেত্রকোণার সিভিল সার্জন তাজুল ইসলাম খান।

গত ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সদর উপজেলার ঠাকুরাকোণা গ্রামের তিন যুবক পান্না আক্তারকে বাড়ির পাশের একটি মাছের খামারে নিয়ে ধর্ষণ করে বলে মামলায় মেয়েটির মা অভিযোগ করেন।

ওই ঘটনার পর পুলিশের ধর্ষণ মামলা না নেওয়ার চেষ্ট এবং ময়নাতদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার অভিযোগ তুলে রাস্তায় নামে এলাকাবাসী।  

এর প্রেক্ষিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করে নেত্রকোণা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ নূর-এ-আলমকে তদন্তভার দেওয়া হয়।

সিভিল সার্জন জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন সমীর কান্তি সরকার স্বাক্ষরিত বদলি পত্রে মোস্তাফিজুর রহমানকে বরগুনা সদর হাসপাতালে আরএমও পদে যোগ দিতে বলা হয়েছে।

পান্না ধর্ষণ ও আত্মহত্যা মামলার সঙ্গে এই বদলির কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি না জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, “এই ক্রাইসিসটা তো ছিলই।”

এদিকে,  বৃহস্পতিবার দুপুরে পান্না আক্তারের মরদেহ আদালতের নির্দেশে পুনঃময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলা হয়েছে।

এছাড়া এ মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি কৌশিক সরকার ওরফে অপু (২৩) ও মামুন মিয়া আকন্দ (২৬) বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

কৌশিক এ মামলার প্রধান আসামি। তিনি জেলা ছাত্রলীগের কৃষিবিষয়ক উপসম্পাদক। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ নূর-এ-আলম জানান, প্রথমে লাশ উদ্ধারের পর হত্যা না আত্মহত্যা জানতে চেয়ে লাশটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছিল। সেই প্রতিবেদন এখনও আসেনি।

শুরু থেকেই স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল, পুলিশ ও ময়নাতন্ত সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ গোপন করার আপচেষ্টা চালানোর অভিযোগ তুলে স্থানীয়রা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।

পান্নার মা আলপনা আক্তারের করা অভিযোগ করা হয়, গত ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ঠাকুরাকোণা গ্রামের তিন আসামি মেয়েটিকে পাশের মাছের খামারে একটি ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। রাত ৮টার দিকে মেয়েটির মা কৌশলে সেখানে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। তখন মেয়েকে ‘বিধ্বস্ত’ দেখাচ্ছিল।

ঘরে এসে মেয়েটি ওই তিন আসামি তাকে ধর্ষণ করেছে বলে জানায়। কিছুক্ষণ পর ‘ধর্ষণকারী’ যুবকদের একজন তাদের ঘরে গিয়ে ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়। কিন্তু স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জেনে ফেলে।

পরদিন বেলা ১১টার দিকে পাশের ঘরের আড়ার সঙ্গে মেয়েটির ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।

এ মামলার আরেক আসামি সুলতান পলাতক রয়েছেন।