গাইবান্ধায় অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিতে সাঁওতালদের ‘বাধা’

জমি ফেরত, পুনর্বাসন ও তিন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যার বিচারসহ সাত দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে যেতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Sept 2017, 01:34 PM
Updated : 13 Sept 2017, 01:35 PM

বুধবার গাইবান্ধা শহরের রেল গেইটে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিতে গোবিন্দগঞ্জ থেকে আসা সাঁওতালদের পথে পথে পুলিশ বাধা দেয় বলে অভিযোগ।

সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, আদিবাসী বাঙ্গালী সংহতি পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও জন উদ্যোগ অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে।

সাঁওতাল নেতারা অভিযোগ করেন, বুধবার গোবিন্দগঞ্জের জয়পুরপাড়া ও মাদারপুর সাঁওতাল পল্লী থেকে বিভিন্ন যানবাহনে করে সাঁওতাল নারী-পুরুষরা তাদের তীর-ধনুক, লাঠি ও ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসছিলেন। কিন্তু গোবিন্দগঞ্জের কাটামোড়, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, তুলসীঘাট, গাইবান্ধা বাস টার্মিনাল এলাকাসহ পথে পথে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

এসময় পুলিশ তাদের যানবাহন থেকে নামিয়ে হাতের তীর-ধনু ও লাঠি কেড়ে নিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তাছাড়া অনেক সাঁওতাল ও বাঙালিদের ফেরৎ যেতে বাধ্য করে পুলিশ বলে অভিযোগ করেন তারা।

অভিযোগ অস্বীকার করে গাইবান্ধার সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) রেজিনুর রহমান বলেন, সাঁওতালদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে বলা হয়। তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের অঙ্গীকারও করেন। কিন্তু তারা কর্মসূচিতে তীর-ধনুক, লাঠিসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে আসতে থাকেন।

“এ কারণে তাদের কাছ থেকে তীর-ধনুক ও অস্ত্র কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচির পরে তাদের সেগুলো ফেরত দেওয়া হবে।”

তিন শতাধিক সাঁওতাল ও বাঙালি দুপুরে গাইবান্ধা শহরের রেলগেইটে সমবেত হয়। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভেতরে যেতে চাইলে প্রধান ফটকের কাছে আটকে দেয় পুলিশ। পরে সেখানে তারা অবস্থান নেয়।

এসময় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য মিহির ঘোষ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, আদিবাসী বাঙ্গালী সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বাবু, জন উদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, জেলা সিপিবির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুরাদজ্জামান রব্বানী, সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার কমিটির সহ-সভাপতি ফিলিমন বাসকে, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী, জেলা যুব ইউনিয়নের সভাপতি প্রতিভা সরকার ববি প্রমুখ।

এসময় সমাবেশস্থলে জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল চলে এলে তার হাতে স্মারকলিপি দেন সাঁওতাল নেতারা। জেলা প্রশাসক সাঁওতাল পল্লীতে হামলা-ভাঙচুর, আগুন-লুটপাট ও তিন সাঁওতাল হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ বিচারের আশ্বাস দেন।