নদীর পানি বাড়লে স্কুলের সামনের মাঠ ও প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা তলিয়ে যায়। এ কারণে প্রায় সময়ই ভেজা ইউনিফর্মে ক্লাস করতে হয় তাদের।
কোথাও বা সরু সুপারি গাছের সাঁকো দিয়ে পার হতে হয়। তারপর আবার কাদা পানিতে ডোবা রাস্তা। মাঝে মধ্যে হাত থেকে পড়ে বইপত্রও ভিজে যায়।
প্রতিষ্ঠান দুটি হলো নূরজাহান মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিম দাউদখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুল দুটির অবস্থান পাশাপশি।
নূরজাহান মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতি আক্তার বলেন, তার বাড়ি ছোট হারজী গ্রামে। সেখান থেকে দুই কিলোমিটার পথ পেরিয়ে প্রতিদিন তাকে স্কুলে যাতায়াত করতে হয়।
“বর্ষা ও জোয়ারের পানিতে কাঁচা রাস্তা তলিয়ে থাকে। খালে সুপারি গাছের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে পার হয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করতে হয়।”
১৯৯০ সালে নূরজাহান মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পাশেই রয়েছে পশ্চিম দাউদখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ছয় থেকে সাত শত শিক্ষার্থী রয়েছে।
নূরজাহান মেমোরিয়ালের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন বলেন, বর্ষা মৌসুমে পানিতে রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেলে স্কুল দুটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত হয়। নিম্নচাপে পানি বেড়ে গেলে স্কুলের মাঠ ২/৩ ফুট তলিয়ে যায়।
“এছাড়া হাঁটু সমান কর্দমাক্ত রাস্তায় আছে অসংখ্য খানাখন্দ। অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হলে রাস্তা দেখা যায় না।”
প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো শিক্ষার্থীর বই-খাতা কাদায় লেপ্টে ও পানিতে ভিজে যায়; এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে তিনি জানান।
পশ্চিম দাউদখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, তার বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী সাঁতার জানে না। তাই অভিভাবকরা সবসময়ই তাদের নিয়ে চিন্তিত থাকেন।
“ফলে বর্ষার সময় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমে যায়।”
মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হাসিনা হামিদার অভিযোগ, “স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদাসীনতার কারণে রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন হচ্ছে না।এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নিরাপদে শিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দাউদখালী ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক রাহাত খান বলেন, খাসহাওলা গ্রামে এ বছর ১৫শ ফুট রাস্তার কাজ হয়েছে। বাকি রাস্তাও নির্মাণের চেষ্টা চলছে।
“তবে পরিষদের সীমিত অর্থে রাতারাতি সব সমস্যার সমাধান সম্ভব না।”