দস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আহ্বান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

বনে ও সাগরে যারা দস্যুতা করছে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 August 2017, 12:41 PM
Updated : 23 August 2017, 12:41 PM

সুন্দরবনের দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের এক অনুষ্ঠানে বুধবার তিনি একথা বলেন।

সুন্দরবনে আর দস্যুতা করতে দেওয়া হবে না বলে হঁশিয়ার করে তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। তাই এখনও যারা বনে ও সাগরে দস্যুবৃত্তিতে আছেন তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন, সরকার আপনাদের সহযোগিতা করবে। আপনারও ভাল থাকেন দেশকেও ভাল থাকতে দেন।”

সুন্দরবন একটি আধুনিক পর্যটনের স্থান হতে পারে বলেও তিনি মনে করেন।

“এটা শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ নয়, এটা হতে পারে আধুনিক পর্যটনের স্থান। পর্যটনের জন্য সুন্দরবন অপার সম্ভাবনাময়।

“সুন্দরবনকে আমরা একটি নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করব। সেজন্য পুলিশ বাহিনীকে শক্তিশালী করছি। আমাদের নৌপুলিশকে এখানে নিয়োজিত করা হচ্ছে। র‌্যাব আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করছে। তাদের পাশাপাশি কোস্ট গার্ডকেও আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে।”

বন ও সাগরের উপর যাদের জীবিকা তাদের কথা চিন্তা করে এটা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

কামাল বলেন, যারা দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন তারা সবাই ভালো পথে থাকার অঙ্গীকার করেছেন।

“আমরা তাদের আইনি সহায়তা দিচ্ছি। তবে এরমধ্যে যদি কারও নামে হত্যা বা ধর্ষণের মামলা থাকে তাহলে তাকে আইনের মাধ্যমে তা মোকাবেলা করতে হবে।”

সুন্দরবন ও সাগরে দস্যুতা করে জীবিকা নির্বাহ করা ১২টি বনদস্যু বাহিনীর ১৩২ জন সদস্যকে স্বাবলম্বী করতে তাদের প্রত্যেককে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এক লাখ টাকার চেক, একটি মোবাইল ফোন সেট, ঈদ সামগ্রী ও এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে বিতরণ করা হয়।

এ উপলক্ষে বুধবার বিকালে বাগেরহাট শহরে হেলাল উদ্দিন স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক খন্দকার রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুন্সি, স্থানীয় সাংসদ মোজাম্মেল হোসেন, তালুকদার আব্দুল খালেক, মীর শওকাত আলী বাদশা ও সংরক্ষিত নারী সাংসদ হ্যাপি বড়াল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আনসার ও সীমান্ত) জ্যোতির্ময় দত্ত, পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুস সামাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

২০১৬ সালের ৩১ মে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সুন্দরবনের বনদস্যু ‘মাস্টার বাহিনী’ প্রধান ও তার নয় সহযোগীর আত্মসমর্পণের মধ্যে দিয়ে বনদস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরা শুরু হয়।

এরপর ১৩ জুলাই বনদস্যু মজনু এবং ইলিয়াস বাহিনীর সদস্যরাও আত্মসমর্পণ করেন।

এই নিয়ে গত প্রায় এক বছরে ১২টি বনদস্যু বাহিনীর ১৩২ জন সদস্য দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তারা বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দেন।