কোটালীপাড়ায় কলেজ মাঠে সেদিন বোমা মিলেছিল যেভাবে

যে চা দোকানির দেওয়া তথ্যে সতের বছর আগে কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছিল, সেই বদিউজ্জামান সরদার আদালতের রায়ের পর বঙ্গবন্ধুকন্যার দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 August 2017, 10:13 AM
Updated : 20 August 2017, 10:17 AM

২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়া শেখ লুৎফর রহমান কলেজের পাশের পুকুরে একটি তার পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হওয়ায় চা দোকানি বদিউজ্জামান সরদার বিষয়টি পুলিশকে জানান।

সেই তারের সূত্র ধরে কলেজ মাঠে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা মঞ্চের নির্ধারিত স্থানে মাটিতে পুঁতে রাখা ৭৬ কেজি ওজনের একটি বোমা পাওয়া যায়।

পরদিন ৮০ কেজি ওজনের আরও একটি বোমা উদ্ধার করা হয় কোটালীপাড়ার হেলিপ্যাড থেকে।

তার মাত্র এক দিন পর নিজের নির্বাচনী এলাকায় দাদার নামে প্রতিষ্ঠিত ওই কলেজ মাঠে জনসভায় শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল।

শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে বহুবার

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার সেই মামলার রায়ে রোববার ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বোমা উদ্ধারের দিনের কথা স্মরণ করে পঞ্চাশোর্ধ বদিউজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওইদিন সকালে সকালে চায়ের দোকান খুলে পানি আনতে যান কোটালীপাড়া লুৎফর রহমান কলেজের পাশের পুকুরে। শেখ হাসিনার জনসভাকে কেন্দ্র করে তখন মঞ্চ, প্যান্ডেল তৈরি ও নিরাপত্তার কাজ চলছিল।

“পানির কলসি পুকুরে ডুবিয়ে আবার উপর তুলতেই একটি বৈদ্যতিক তার কলসির সঙ্গে জড়িয়ে আসে। আমি তখন বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি আর পৌর মেয়র কামাল হোসেন ও কোটালীপাড়া থানা পুলিশকে জানাই।”

পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তারের সূত্র ধরে অনুসন্ধান করে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল থেকে দূর নিয়ন্ত্রিত বোমা উদ্ধার করে।

“প্রধানমন্ত্রী বেঁচে আছেন বলেই বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সব জায়গায় উন্নয়ন হচ্ছে। আমাদের ভাগ্যের উন্নতি ঘটাচ্ছেন। আল্লাহর কাছে আমি তার দীর্ঘায়ু কামনা করি,” বলেন বদিউজ্জামান।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী সে সময় তাকে দুই লাখ টাকা পুরস্কার দিয়েছিলেন। কোটালীপাড়া বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্সে মাস্টার রোলে নাইট গার্ডের চাকরি দিয়েছিলেন।

বদিউজ্জামান বলেন, তার ছেলেটি জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। তার চিকিৎসার জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে হত বলে ঠিকমতো ডিউটি করতে পারতেন না। তাই পরে চাকরি ছেড়ে দেন। এখন চায়ের দোকান করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন।

“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বছর আগেও তার অ্যাসাইনমেন্ট অফিসারকে আমার বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। তিনি আমার ও আমার পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছেন। ছেলে-মেয়েকে চাকরি দেওয়ার ইচ্ছা জানিয়েছেন।”

ছেলে-মেয়ে চাকরি পেলে সংসারে স্বচ্ছলতা আসবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বদিউজ্জামান।