লাইন ভেঙে লালমনিরহাটের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ

বন্যার পানিতে লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় লালমনিরহাটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

লালমনিরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 August 2017, 02:32 PM
Updated : 13 August 2017, 02:48 PM

বুড়িমারী-লালমনিরহাট রেল লাইনের তিনটি স্থান ভেঙে রোববার সকাল থেকে এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ওই রুটের সব ট্রেনের শিডিউল বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আব্দুল মোত্তালেব।

তিনি বলেন, বুড়িমারী স্টেশনে পার্বতীপুরগামী কমিউটার এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকা পড়ে আছে। এছাড়া সান্তাহার থেকে ছেড়ে আসা বুড়িমারীগামী ট্রেনটিরও শিডিউল বাতিল করা হয়েছে।

“এ রুটে চলা চার জোড়া ট্রেন সান্তাহার ও কাউনিয়া রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকাগামী রংপুর এক্সপ্রেস, নীলসাগর, দ্রুতযান ও সীমান্ত এক্সপ্রেসে যাত্রীদের তুলে দিতো। এ ট্রেনগুলো না চলায় লালমনিরহাটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।”

শনিবার রাতে বুড়িমারী-পাটগ্রাম রেল লাইনের পাটগ্রাম ব্র্যাক অফিস এলাকায়, হাতীবান্ধা রেলওয়ে স্টেশন থেকে হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজের মাঝামাঝি স্থান ও পারুলিয়া-ভোটমারী রেলওয়ে লাইনের মাঝামাঝি স্থানে লাইন ভেঙে গেছে।

ফলে এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

রেল লাইন সংস্কার না করা পর্যন্ত ট্রেন চলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম।

তিনি বলেন, বন্যায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী স্থলবন্দর রেলওয়ে রুটের ৭৮ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে তিনটি স্থানে ভেঙে গেছে। একটি লোকাল ট্রেন বুড়িমারী স্থলবন্দরে আটক পড়ে আছে। অন্যসব ট্রেনের শিডিউল বাতিল করা হয়েছে।

“পানি নেমে যাওয়ার পর ভাঙা স্থানগুলো সংস্কার করে আবার ট্রেন সার্ভিস চালু করা হবে। তবে কবে নাগাদ ট্রেন সার্ভিস চালু করা সম্ভব হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।”

এদিকে জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে।

রোববার সকালে তিস্তা ব্যারেজের উজানে ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

 বন্যায় লালমনিরহাট সদর, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও পাটগ্রাম উপজেলার ৪৫ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে প্রায় চার লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। তাছাড়া সাড়ে ২৫ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।

তিস্তা ব্যারাজ স্থাপনকাল থেকে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ পরিমাণ পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পানি পরিমাপক) উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিনুর রশীদ।

তিনি বলেন, তিস্তা ব্যারাজের সামান্য ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া বড় ধরনের কোনো আশঙ্কা নেই। তবে হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানী বাজার থেকে তিস্তা ব্যারাজের আনসার ক্যাম্প পর্যন্ত ৫০০ মিটার ‘ফ্লাড বাইপাস’ মহাসড়কের কিছু অংশ ভেঙে গেছে।

এর ফলে নীলফামারীর সঙ্গে লালমনিরহাটের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ বলেন, রোববার পর্যন্ত জেলার পাঁচটি উপজেলার বানভাসি মানুষের মধ্যে ১৬০মেট্রিক টন চাল ও নগদ পৌনে পাঁচ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।