মৃত মো. মঞ্জুর শেখ (৫৮) মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মালাকানগর এলাকার মৃত বাদশা মিয়া শেখের ছেলে।গত ৩০ জুলাই ইয়াবাসহ গ্রেপ্তারের পর কারাগারে ছিলেন তিনি।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ( আরএমও ) শাহীন মো. আব্দুর রহমান চৌধুরী জানান, রোববার সন্ধ্যায় মঞ্জুর শেখকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।
“এর আগে গত ৩০ জুলাই মঞ্জুরকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসা দেওয়ার পর পুলিশ নিয়ে যায়।”
ময়নাতদন্তের পর প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এর আগে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না বলে জানান এ চিকিৎসক।
কক্সবাজার গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, গত ৩০ জুলাই কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের কক্সবাজার অংশ থেকে এক হাজার ইয়াবাসহ মো. মঞ্জুর শেখকে আটক করা হয়। পরে ওইদিন রাতেই কক্সবাজার সদর থানায় তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয়।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি রণজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, ইয়াবাসহ আটক দেখিয়ে মো. মঞ্জুর শেখের বিরুদ্ধে গত ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলা নথিভুক্তের সময় আসামি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
“মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, অভিযানের সময় পালানোর চেষ্টাকালে পুলিশ ধাওয়া দিলে মঞ্জুর পায়ে সামান্য আঘাত পেলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”
পরে হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক তাকে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে ছাড়পত্র দিলে পুলিশ কারাগারে পাঠায় বলে জানান ওসি।
তবে মঞ্জুরের মেয়ে আয়েশা বেগম বলেন, তার বাবা ট্রাক কেনার জন্য কথাবার্তা বলতে কক্সবাজার যায়। গত ৩০ জুলাই সন্ধ্যার দিকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপরিচিত এক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে ইয়াবাসহ তাকে আটকের কথা জানায়। পরে তাকে ছেড়ে দিতে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দাবি করেন।
“ওই ব্যক্তির দেওয়া বিকাশ নম্বরে ( ০১৭৭৯-৭০৯০৮০ ) ঘটনার দিন রাতে বিভিন্ন এজেন্ট নম্বর থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা পাঠাই। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরও বাবাকে ছেড়ে না দিয়ে মামলা করা হয়।”
তিনি বলেন, “খবর পেয়ে কক্সবাজার গিয়ে দেখতে পাই পুলিশের নির্যাতনে বাবার হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর জখম রয়েছে।”
এরপর রোববার সন্ধ্যায় কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি বলেন, মঞ্জুর শেখ একজন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী। তিনি কক্সবাজার থেকে কৌশলে ইয়াবার ছোট-ছোট চালান মুন্সীগঞ্জ নিয়ে খুচরা হিসেবে বিক্রি করতেন।
“অভিযানের সময় পালানোর চেষ্টাকালে পায়ে সামান্য আঘাত পাওয়ায় মঞ্জুরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।পরবর্তীতে ব্যবস্থাপত্র দে্রয়ার পর চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।”
কক্সবাজার জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার অর্পণ চৌধুরী হাজতি মৃত্যুর বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করলেও কি কারণে মারা গেছে সে বিষয়ে কিছু বলেননি।
মঞ্জুর শেখের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মাদক আইনে একটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি মো. মাইন উদ্দিন।