অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর জানা যায়, প্রতিরাতে চলত ধর্ষণ

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় ধর্ষণের পর এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীর ছেলেসন্তানের জন্ম হয়েছে।

লালমনিরহাট প্রতিনিধিআনিছুর রহমান লাডলা, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2017, 04:03 AM
Updated : 7 August 2017, 04:03 AM

এ ঘটনায় উপজেলার দক্ষিণ বালাপাড়া ব্রহ্মত্তর গ্রামের মমিনুর রহমানের (২৮) বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তরুণীর আত্মীয়।

আদিতমারী থানার ওসি হরেশ্বর রায় বলেন, বৃহস্পতিবার আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণীর ছেলেসন্তানের জন্ম হয়।

“খবর পেয়ে ওই রাতেই হাসপাতালে গিয়ে বিস্তারিত শুনেছি। অভিযুক্ত মমিনুরের নামে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।”

তরুণীর আত্মীয়রা বলেন, এই তরুণী অল্পকিছু বিষয় একেক সময় একেক রকম করে বোঝেন। শৈশব থেকেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী।

শৈশবেই বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর চাচা আফতাব উদ্দিনের উঠানের এক কোণে স্থানীয়দের সহযোগিতায় একটি টিনের চালাঘরে বসবাস করেন। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে জীবিকা চালান। হঠাৎই প্রতিবেশীরা তার শারীরিক পরিবর্তন দেখেন।

মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মজমুল হক বলেন, মমিনুর তাকে কয়েক মাস ধরে প্রায় প্রতিরাতে ধর্ষণ করেন বলে তরুণীর বক্তব্যে মনে হয়েছে।

“এ বিষয়ে বৈঠকে ডাকা হলে মমিনুর কৌশলে পালিয়ে চট্টগামে চলে যান। পরে স্থানীয়রা তরুণীকে কিছু আর্থিক সহায়তা দিয়ে বৈঠক থেকে চলে যায়।”

বৃহস্পতিবার বিকালে তরুণীকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানোর সময় স্বামীর নাম লেখা নিয়ে বিতর্ক বাধলে স্থানীয় সাংবাদিকদের সহায়তায় বাবার নাম হিসেবে মমিনুরের নাম লেখা হয়।

হাসপাতালে দেখা গেছে, নবজাতককে বিছানায় শুইয়ে সারাক্ষণ পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন তরুণী। অপরিচিত কেউ এলে তাকে কাছে ভিড়তে দিচ্ছেন না। আর সারাক্ষণ চেয়ে থাকেন ছেলের দিকে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক গোলাম আম্বিয়া আদিল জানান, “বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হলেও তার মাতৃত্ববোধ অনেক। পুরো হাসপাতালের সবাই হতভম্ব হয়েছি তার মাতৃত্ববোধ দেখে। তার যত্ন ও পরিচর্যার জন্য সবারই সহায়তার হাত বাড়ানো দরকার।”

সন্তান ও মা দুইজনই সুস্থ আছেন বলে তিনি জানান।

ওসি হরেশ্বর রায় বলেন, আসামি মমিনুরকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।