সহকর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ রাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন তার সহকর্মী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 August 2017, 11:37 AM
Updated : 4 August 2017, 11:43 AM

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রুহুল আমীনের বিরুদ্ধে গত সোমবার উপাচার্য বরাবর ওই শিক্ষিকা অভিযোগ করেন। 

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, রুহুল আমীনের অধীনে ওই শিক্ষিকা ২০১২ সাল থেকে পি এইচ ডি করছিলেন। কিন্তু গত দুই বছর ধরে রুহুল আমীন তাকে ‘যৌন হয়রানি’ করা শুরু করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়সূচির বাইরেও অধ্যাপক রুহুল আমীন তাকে চেম্বারে ডেকে কম্পিউটারে বিভিন্ন অশ্লীল ভিডিও দেখানোর চেষ্টা করতেন। গত ২৬ এপ্রিল তাকে সন্ধ্যার পর বাসায় যেতে বলতেন বলে ওই শিক্ষিকার অভিযোগ।

অভিযোগে বলা হয়, এ কারণে তার অধীনে পিএইচডি না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে গত ২৬ জুলাই সুপারভাইজার পরিবর্তনের জন্য বিভাগ বরাবর আবেদন করেন তিনি।

এ বিষয়ে ওই শিক্ষিকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি আমার পিএইচডি দ্রুত শেষ করতে চেয়েছিলাম; লোকলজ্জার ভয়ে এতদিন মুখ খুলিনি।

“আমি সুপারভাইজার পরিবর্তন করায় রুহুল আমীন স্যার তার ক্ষমতার জোরে বিভাগের অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে জোট বেঁধে আমাকে নানাভাবে হয়রানি শুরু করেন। এতে বাধ্য হয়ে উপাচার্য বরাবর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছি।”

অভিযোগ অস্বীকার করে রুহুল আমীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগে কেন ওই শিক্ষিকা অভিযোগ করেননি? উনি তো পাঁচ বছর আছেন আমার সাথে। আজ যখন আন্দোলন চলছে, তখন উনি এই অভিযোগ করলেন। এ অভিযোগ হান্ড্রেড পারসেন্ট মিথ্যা।

“আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে আমি নাকি অশ্লীল ভিডিও দেখাই। আমি তো ল্যাপটপই চালাতে পারি না। ফেইসবুকও নাই। আর আমার মোবাইল ১২০০ টাকার।”

ওই শিক্ষিকার সঙ্গে বিভাগের কোনো শিক্ষকেরই ভালো সম্পর্ক নেই দাবি করে অধ্যাপক আমীন  বলেন, “সকলের সঙ্গেই তিনি খারাপ আচরণ করেন। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে যে কথা বলে, তার বিরুদ্ধেই বিভিন্ন অপপ্রচারণা চালান তিনি।”

বিভাগের ১১ জন শিক্ষক ওই শিক্ষিকাসহ বিভাগের চেয়ারম্যান নাসিমা জামানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দেওয়ার কারণেই এমন মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে বলে দাবি রহুল আমীনের।

তিনি বলেন, নাসিমা সব একাডেমিক সিন্ধান্ত একই নেন। ফলে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা জানানো হয়েছে।

নাসিমা জামান বলেন, “আমি যখন দেখলাম যে, আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে ওই ১১ জন শিক্ষক অভিযোগ দিয়েছেন উপাচার্যের কাছে, তখন আমি আমার শিক্ষকদের অপ্রাসঙ্গিক ও অমর্যাদাকর কার্যকলাপের প্রতিকার চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।”

নির্যাতনের অভিযোগ আনা ওই শিক্ষিকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তার বিষয়টি তো আমি বলতে পারি না। তবে সঠিক তদন্ত হলেই বিষয়টি বেরিয়ে আসবে।”