তবে নবীনগর থানার ওসি বলছেন, মাসুদ মিয়া নিজের স্বাক্ষরে সীমান্ত খোকনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
এর প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসপি মো. মিজানুর রহমান।
মঙ্গলবার রাতে নবীনগর থানায় ডেইলি অবজারভারের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি সীমান্ত খোকনের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারায় একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়, যার বাদী নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের কিশোরপুর (টানচক) গ্রামের মো. মাসুদ মিয়া।
মাসুদ মিয়া বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সীমান্ত খোকন নামের কোনো সাংবাদিককে আমি চিনি না। যাকে চিনি না তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না।”
তাহলে এ মামলা কীভাবে হলো প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না।”
বাদী মাসুদ মিয়া স্বাক্ষরিত মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, আসামি তার মেয়ে ও পুলিশের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা, অশ্লীল, বানোয়াট কথাবার্তা প্রকাশ করে সামাজিকভাবে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট ও হেয় প্রতিপন্ন করার মানসে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও উস্কানি প্রদান করেছেন।
গত ২৫ জুলাই সীমান্ত খোকন তার ফেইসবুকে এক স্ট্যাটাসে লেখেন, আপন চাচার হাতে ভাতিজি ধর্ষণের শিকার হয়েছে ও মা-মেয়েকে দুই দিন যাবত ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
বাদীর অস্বীকার প্রসঙ্গে সীমান্ত খোকন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নবীনগর থানার ওসি মো. আসলাম সিকদার কৌশলে বাদীর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা রেকর্ড করেছেন।
“গত ২৭ জুলাই আমার বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা করা হবে মর্মে এই পুলিশ কর্মকর্তা হুমকি দিয়েছিলেন।”
নবীনগর থানার ওসি মো. আসলাম সিকদার বলেন, বাদী মো. মাসুদের লিখিত আর্জি পেয়েই মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
তাহলে বাদী এখন অস্বীকার করছে কেন প্রশ্ন করা হলে ওসি বলেন, “হয়ত ভয়ে সে অস্বীকার করছে।”
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলা তো বাদীর দরখাস্তের প্রেক্ষিতেই হয়েছে। তবে বাদী যদি অস্বীকার করে থাকেন বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
আইসিটি আইনের ৫৭ ধারাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি দাবি করে তা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন সম্পাদক পরিষদসহ গণমাধ্যমকর্মীরা।
৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কোনো ব্যক্তির তথ্য যদি নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ করে, এতে যদি কারও মানহানি ঘটে, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, তা হবে অপরাধ। এর শাস্তি অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক এক কোটি টাকা জরিমানা।
ফেইসবুক স্ট্যাটাস ও সংবাদ প্রতিবেদনের জন্য সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এ ৫৭ ধারায় মামলা হয় এবং কয়েকজনকে কারাগারেও পাঠানো হয়েছে।