আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে ট্রাক চালককে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ

‘টাকা না পেয়ে’ এক ট্রাক চালকের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যা চেষ্টার মামলা হয়েছে সিরাজগঞ্জের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে।  

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2017, 10:23 AM
Updated : 3 August 2017, 10:55 AM

সিরাজগঞ্জ সদর থানার ওসি হেলাল উদ্দিন জানান, ট্রাক চালক হানিফ শেখ বাদী হয়ে বুধবার মামলাটি করেন।

দগ্ধ হানিফের বাড়ি শহরের রেলওয়ে কলোনিতে। তাকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে (সার্জারি ওয়ার্ডে) ভর্তি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে সিরাজগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির কোষাধ্যক্ষ শাহাদত হোসেন ও তার দুই সহযোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে বলে ওসি জানান।   

সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক জালাল আহম্মেদ বলেন, “হানিফের শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”

হানিফের শাশুড়ি আসমা বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে হানিফের মেয়ের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন শাহাদাত। ওই ঘটনায় শাহাদতের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন তারা।

“সেসময় শাহাদত প্রভাব খাঁটিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করতে চাপ দেন। ফলে মামলাটি তুলে নিতে বাধ্য হই।”

আসমা বলেন, “কিন্ত থানায় থেকে অভিযোগ তুলে নিতে এবং বিষয়টি মীমাংসা করতে ১০/১২ লাখ টাকা খরচ হয় জানিয়ে শাহাদত ক্ষতিপূরণ বাবদ আমাদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন।

“টাকা দিতে না পারায় ভয়ভীতি দেখিয়ে ও আমাদের ঘরবাড়ি তার নামে লিখে দিতে  চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে কলোনির বাড়ি থেকে পালিয়ে শহরের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতে শুরু করি।”

তিনি বলেন, “গত সোমবার (৩১ জুলাই) রাত ২টার দিকে শাহাদত ও তার সহযোগীরা হানিফকে ভাড়া বাসা থেকে তুলে রেলওয়ে কলোনির ঘরে নিয়ে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।”

সেখান থেকে পরদিন সকালে হানিফকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহাদত হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দানিউল হক দানি জানান, ২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত শাহাদত হোসেন শহর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। এরপর সম্মেলন হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও অনুমোদন হয়নি। প্রস্তাবিত কমিটিতে তাকে আগের পদেই বহাল রাখা হয়েছে।

এর আগে ২০১৪ সালে রেলওয়ে কলোনি মহল্লায় মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনকে মারধর ও তার বাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় শাহাদতের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা হয়েছিল বলে সদর থানার সাবেক এসআই আব্দুল বারেক জানান।

তিনি বলেন, ওই মামলায় শাহাদতকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। পরে বাদীর সঙ্গে আপোস করে বিষয়টি মীমাংসা করে নেন তিনি ।

“এছাড়া সাত-আট মাস আগেও তার বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা হয়। সেটিও তিনি মীমাংসা করে নিয়েছেন। বাদীরা মামলা মীমাংসা করে নিলেতো পুলিশেরও কিছু করার থাকে না।”

অভিযোগের প্রমাণ পেলেই শাহদতসহ বাকিদের গ্রেপ্তার করা হবে ওসি হেলাল উদ্দিন জানান।