অধ্যক্ষ ‘লাঞ্ছিত’, ঘুষের অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার

ঘুষ নিয়েও কাজ না করার কথা বলে নীলফামারী  সদরে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 August 2017, 02:52 PM
Updated : 2 August 2017, 02:52 PM

চরড়া বড়গাছা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার বিকালে কলেজ চত্বরে চওড়া বড়গাছা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মনোয়ার হোসেন মুন তাকে লাঞ্ছিত করেছেন।

এ ঘটনায় বুধবার শহিদুল ইসলাম সদর থানায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে দুপক্ষ।

মনোয়ার হোসেন মুন বলেন, উত্তর চওড়া বড়গাছা স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিদ্যালয় শাখায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর তিনি ওই পদে আবেদন করেন। গত ২১ জুন লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

তার অভিযোগ, ওই পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তার কাছে ১৬ লাখ টাকা চান অধ্যক্ষ। তিনি অধ্যক্ষকে ১৫ লাখ টাকা দেন।

“কিন্তু গত ৪ জুলাই প্রকাশিত ফলাফলে আমার নাম বাদ দিয়ে ২২ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রশান্ত কুমার রায় নামে এক ব্যক্তিকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে প্রথমস্থান অধিকারী দেখানো হয়।”

মনোয়ার বলেন, এর জেরে মঙ্গলবার টাকা ফেরত চাইতে গেলে আমাকে কলেজ চত্বর থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন অধ্যক্ষ। এ সময় উভয়য়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।

অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম বলেন, ওই একটি পদে ২৯ জন প্রার্থী আবেদন করেন। একজনের আবেদন ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় ২৮ জনের আবেদন বৈধ হয়। ২১ জুন অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় ১৬ জন প্রার্থী অংশ নেন। গত ৪ জুলাই সকালে ঘোষিত ফলাফলে প্রশান্ত নামের একজন প্রথম হন।

“বিকালে কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটি ওই ফলাফল স্থগিত ঘোষণা করেন। মনোয়ারের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার প্রশ্নই আসে না।”

মামলায় অধ্যক্ষ শহিদুল অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার বিকালে কলেজ চত্বরে তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ছাত্রলীগ নেতা মনোয়ার।

“চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে আমার উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে এলোপাথারী কিল ঘুষি মারতে থাকে। আমার সহকর্মীরা আমাকে উদ্ধার করে নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করান।”

এ ঘটনায় হত্যার চেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে বুধবার সদর থানায় একটি অভিযোগ দেওয়ার কথা জানান তিনি।  

কলেজ চত্বরে শিক্ষক-কর্মচারীর ব্যানারে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানের বিদ্যালয় শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক ইউনুস আলী, জেলা স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সদস্য সচিব খোকারাম রায়, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুধীর চন্দ্র রায়, একই সংগঠনের সদর উপজেলা সভাপতি উত্তম কুমার রায়, সাধারণ সম্পাদক তিমির কুমার বর্মণ প্রমুখ।

অপরদিকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেবেশে বক্তব্য রাখেন, চওড়া বড়গাছা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাসেদ আল মামুন, ব্যবসায়ী শফিক আল ওয়াজান ও এলাকার নিয়ামুল বসির।

নীলফামারী সদর থানার ওসি বাবুল আকতার বলেন, অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।