বেনাপোল বন্দর: ‘সমস্যায়’ শুরু ২৪ ঘণ্টার কার্যক্রম

ট্রাক টার্মিনাল, শেড, ক্রেন ও ফর্ক লিফট নষ্ট হওয়াসহ নানা সমস্যা মাথায় নিয়েই ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হচ্ছে বেনাপোল বন্দর ও কাস্টমস।

আসাদুজ্জামান আসাদ, বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 August 2017, 02:04 PM
Updated : 2 August 2017, 02:16 PM

বন্দরের উপ পরিচালক (ট্রাফিক) রেজাউল করিম বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যে গতিশীলতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কাস্টমস ও বন্দর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হচ্ছে।

এরপর থেকেই কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ পুরোদমে কাজ শুরু করেছে বলে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিদর্শক মনিরুজ্জামান মনির জানান।

কাস্টমস ও বন্দর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা ইতিবাচক পদক্ষেপ মন্তব্য করে বেনাপোল সিঅ্যান্ড এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন বলেন, প্রতিদিন ভারত থেকে আটশ থেকে এক হাজার পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করবে। বন্দরে অবকাঠামোগত উন্নয়ন না করায় এবং বন্দরের অভ্যন্তরে কোনো জায়গা না থাকার কারণে সেসব পণ্য রাখা সম্ভব হবে না।

“বেনাপোল বন্দরের নিজস্ব ট্রাক টার্মিনাল, আমদানিকৃত বিভিন্ন গাড়ি রাখার জন্য ওপেন ইয়ার্ড, ভারী মালামাল ও মেশিনারির নতুন ইয়ার্ড এবং শেড প্রয়োজন। আর এজন্য কমপক্ষে ৫০ একর জমির দরকার।”

এছাড়া ভারতীয় ট্রার্মিনাল হতে আমড়াখালী পর্যন্ত বাইপাস সড়ক ও যাত্রীদের নিরাপত্তা, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ ৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল প্রয়োজন বলে জানান জামাল হোসেন।

বেনাপোল সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বর্তমানে বন্দরের ধারণ ক্ষমতা ২০ থেকে ২৫ হাজার মেট্রিক টন। মালামাল রয়েছে দুই লাখ মেট্রিক টন।

“খোলা জায়গায় রোদ, বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে আমদানিকৃত মালামাল। ক্রেন ও ফর্ক লিফট নষ্ট থাকায় লোডিং-আনলোডিংয়ে সমস্যা হচ্ছে।”

বন্দর ও কাস্টমস ২৪ ঘন্টা খোলা রাখার সুবিধা পেতে হলে বন্দরের অব্যবস্থাপনা দূর করা ও অবকাঠামোর উন্নয়ন জরুরি বলে জানান তিনি।

সরেজমিনে বন্দর ঘুরে জানা যায়, বর্তমানে বন্দরে ১০ টন, ছয় টন ও পাঁচ টনের দুটি করে ফর্ক লিফট চালু আছে। ১১টি ক্রেনের মধ্যে সচল আছে মাত্র ছয়টি। 

বেনাপোল বন্দরের পণ্য উঠা-নামানোর কাজের দায়িত্বে আছে ঢাকার মহাখালীর মেসার্স এসআইএস লজিস্টিক্যাল সিস্টেম।

প্রতিষ্ঠানটির বেনাপোল প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বেনাপোল বন্দরের জন্য বিদেশ থেকে দুইটি অত্যাধুনিক ক্রেন আনা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১০ অগাস্টের ভেতর বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

“এরপর পণ্য উঠা-নামানোর সমস্যা থাকবে না। তবে ইঞ্জিনের বিষয় তো, মাঝেমধ্যে সমস্যা হতে পারে। আমরা সব ক্রেন ঠিক করে দিচ্ছি।”

বন্দরের উপ পরিচালক রেজাউল বলেন, “বন্দরের জায়গা সংকট ও ইক্যুইপমেন্ট স্বল্পতার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা আমাদের জানিয়েছেন। নতুন করে শেড ও গুদাম নির্মাণ কাজ চলছে। এর বাইরেও সমস্যাগুলো সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”