রোববার বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত প্রত্যেকের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে বলে জানান বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী।
শুক্রবার রাতে তুফান সরকার, দীপু, রুপম ও আতিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, গ্রেপ্তারদের মধ্যে আতিক স্বীকারোক্তি দেওয়ায় তার রিমান্ড আবেদন করা হয়নি।
এছাড়া সকালে বগুড়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ্দ নুরে আলম সিদ্দিকী ওই কিশোরী ও তার মাকে দেখতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান।
জেলা প্রশাসক বলেন, মামলার আসামি মারজিয়া হাসান রুমকি জনপ্রতিনিধি হওয়ায় এ বিষয়ে তার সম্পৃক্ততা তদন্তে বগুড়া এডিসি জেনারেল আব্দুস সামাদকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বগুড়ার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম এবং বগুড়া জেলা সমাজ সেবা অফিসার শহিদুল ইসলাম।
ওই কিশোরী সাংবাদিকদের জানান, তাকে তুফান সরকার বিয়ে করবে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এমনও বলা হয়েছে তুফানের স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ে করবে।
এদিকে ধর্ষণ ও নির্যাতন মামলার আসামি তুফানের স্ত্রী আশা আকতার, আশার বড় বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকি ও তুফানের শাশুড়ি রুমি খাতুনসহ বাকিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন বগুড়া সদর থানার ওসি এমদাদ হোসেন।
এদিকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় রোববার বেলা ৩টায় বগুড়া শহরের সাতমাথায় সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।
প্রতিবাদ সভা থেকে দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
মেয়েটির মায়ের মামলার নথি থেকে জানা যায়, এ বছর এসএসসি পাশ করা ওই কিশোরীকে ভালো কলেজে ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে ১৭ জুলাই ও পরে কয়েকবার ধর্ষণ করেন বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক তুফান। এ কাজে তাকে সহায়তা করেন তার কয়েকজন সহযোগী।
বিষয়টি জানতে পেরে তুফানের স্ত্রী আশা ও তার বড় বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকিসহ একদল সন্ত্রাসী শুক্রবার দুপুরে ওই কিশোরী এবং তার মাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাদের মারধর করে নাপিত দিয়ে মা ও মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেন।