সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান বুধবার দেড় বছর আগের এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।
আসামিদের মধ্যে রুবেল মিয়া, আরজু মিয়া ও পলাতক উস্তার মিয়াকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি দশ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
আর রুবেলের ভাই জুয়েল মিয়া ও শাহেদকে সাত বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বিচারক।
হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার জুয়েল-রুবেলের বাবা আব্দুল আলী বাগাল এবং পলাতক আসামি বাবুল মিয়া ও বিল্লালকে আদালত খালাস দিয়েছে।
মনির সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে, তার দুই চাচাত ভাই শুভ ও তাজেল একই স্কুলে দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। আর তাদের প্রতিবেশী ইসমাইল ছিল সুন্দ্রাটিকি মাদ্রাসার ছাত্র।
নিখোঁজের পাঁচ দিন পর ইছাবিল থেকে তাদের বালিচাপা লাশ উদ্ধার হলে দেশজুড়ে আলোচনা সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় বাহুবল থানায় নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মনির মিয়ার বাবা আবদাল মিয়া।
২০১৬ বছরের ২৯ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির তৎকালীন ওসি মোক্তাদির হোসেন নয়জনের বিরুদ্ধেই আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
সেখানে বলা হয়, সুন্দ্রাটিকি গ্রামের দুই পঞ্চায়েত আবদাল মিয়া তালুকদার ও আব্দুল আলী বাগালের মধ্যে পারিবারিক বিরোধের জেরে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
আসামিদের মধ্যে বাচ্চু মিয়া র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।
হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর মামলার বিচারকাজ শুরুর পর ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
এরপর গত ১৫ মার্চ মামলাটি সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হলে আরও সাতজনের সাক্ষ্য শেষে রায় দেওয়া হল।
বাদীপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি কিশোর কুমার কর বলেন, “মামলার রায়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। এ রকম একটা নির্মম ঘটনায় আমরা আশা করেছিলাম সব আসামির মৃত্যুদণ্ড হবে।”
অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আসামিপক্ষও।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. শফিউল আলম বলেন, “এ রায় আইনেই দৃষ্টিতে ন্যায় বিচারের পরিপন্থি।”
আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন বলে তিনি জানান।