খানাখন্দ ভরা বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় সড়কে দীর্ঘ জট

খানাখন্দ ও ক্ষতিগ্রস্ত একটি সেতুতে রেশনিং করে গাড়ি চলার কারণে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট দেখা দিয়েছে।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2017, 11:09 AM
Updated : 25 July 2017, 11:09 AM

মঙ্গলবার সকালে মহাসড়কের ৪৮ কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

মহাসড়কজুড়ে এ অবস্থার কারণে আটকে পড়া যানবাহনের যাত্রী ও চালকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ অংশের হাটিকুমরুল থেকে সিরাজগঞ্জ-বগুড়া সড়কের চান্দাইকোনা পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার এবং হাটিকুমরুল-বনপাড়া সড়কের সলঙ্গার দবিরগঞ্জ পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটিার পর্যন্ত এবং হাটিকুমরুল-বঙ্গবন্ধু সেতু সড়কের নলকা সেতু পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কে প্রচুর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।

“সওজ অফিস খানাখন্দগুলো সংস্কার করার চেষ্টা করলেও বৃষ্টি তাতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত নলকা সেতুর সংস্কারের কাজ চলায় সেতুর উপর দিয়ে রেশনিং পদ্ধতিতে যানবাহন সেতুর দুই পাড়ে যানবাহন আটকা পড়ছে।”

এ কারণে মহাসড়কের বিশাল এলাকাজুড়ে যানবাহনের দীর্ঘলাইন ও যানজট দেখা দিয়েছে বলে জানান তিনি।  

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ দাউদ জানান, সেতু অতিক্রম করার পর যানবাহনগুলো নলকা সেতুর পূর্বপাড়ে গিয়ে আটকে যাচ্ছে। সরু সেতুটির একপাশ বন্ধ রেখে আরেক পাশের যানবাহন পারাপার হচ্ছে।

“এই রেশনিং পদ্ধতির কারণে সেতুর দুপাশে প্রচুর যানবাহন আটকা পড়ছে। ফলে পশ্চিম সংযোগ সড়কে অন্তত ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনগুলো দীর্ঘ লাইনে ধীরগতিতে চলছে।”

সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, নলকা সেতুর উপরিভাগের জয়েন্ট এক্সপানশনগুলোর উপরের বিটুমিন ও পাথরের মিশ্রন কেটে সংস্কার করা হচ্ছে।

“এ কারণে সেতুর একপাশ দিয়ে যানবাহন চলতে হচ্ছে। পাশাপাশি মহাসড়কের খানাখন্দগুলোর মেরামত কাজও বৃষ্টির কারণে উঠে যাচ্ছে। সব মিলে বাজে পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি।”

নলকা সেতুর ওপরে এক ঘণ্টা কাজ করা হলে দুই পাশে ৪ কিলোমিটার করে প্রায় আট কিলোমিটার যানজট হয়। এ কারণে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চল এবং ঢাকার পথে চলাচল করা যানবাহনগুলোতে এর প্রভাব পড়ছে বলে জানান তিনি।

বৃষ্টি শেষ না হলে এ অবস্থার তেমন উন্নতি হওয়া সম্ভব নয়। সমস্যা থাকবেই এবং এর মধ্যে চলাচলও করতে হবে, বলেন এ প্রকোশলী।

তিনি বলেন, আশির দশকে নির্মিত নলকা সেতু এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত দুই মাস ধরে থেমে থেমে সংস্কার কাজ চলছে। কিন্তু বৃষ্টি হলে এবং যানবাহনের চাপে বেড়ে গেলে আবারও আগের অবস্থায় ফিরে যায়।

বগুড়া থেকে ঢাকাগামী এস আর পরিবহনের চালক জুলমত আলী বলেন, “সকাল ৮টায় চান্দাইকোনায় পৌঁছেছিলাম। দুপুর সোয়া ২টায় মাত্র ৭ কিলোমিটার মহাসড়ক অতিক্রম করে রায়গঞ্জের ভূইয়াগাতিতে পৌঁছেছি।”

বগুড়া থেকে ঢাকাগামী বাসের যাত্রী রোমানা খাতুন বলেন, “এত যানজটের কারণে বাসে বসে থাকতে থাকতে অস্থির হয়ে যাচ্ছি। ছেলে-মেয়েরা কান্নাকাটি করছে।”

ঢাকাগামী বাসের যাত্রী আব্দুল মতিন বলেন, “সকাল ৬টায় তাড়াশের মহিষলুটি থেকে বাসে উঠেছি। ২টায় বাসটি হাটিকুমরুল গোলচত্বরে এসে পৌঁছেছে।”