মারা গেল শ্রীমঙ্গলের সেই পোষা হাতি

আট দিন রোগে ভুগে অবশেষে মারা গেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজলক্ষ্মী নামের সেই পোষা হাতিটা।

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2017, 07:29 AM
Updated : 21 July 2017, 10:11 AM

শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকাল ১০টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতিটির মৃত্যু হয়। তার ময়নাতদন্তের জন্য জেলা লাইভস্টক কর্মকর্তা হেদায়েত উল্লাহকে প্রধান করে তিন সদস্যের দল গঠন করা হয়েছে।

গত শুক্রবার হাতিটি অসুস্থ হয়। বুধবার সন্ধ্যায় খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিলে তাকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছিল। তবু তার অবস্থার অবনতি হয়।

হাতিটি মেরুদণ্ডে আঘাত পেয়েছিল বলে ধারণা করছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের ভেটেরেনারি সার্জন আরিফুর রহমান।

হাতিটিকে তিনি ঢাকা চিড়িয়াখানা ও ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন বলে এর আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন।

হাতির মালিক কমলঞ্জ উপজেলার কানাইদেশি গ্রামের সিরাজুল ইসলাম। হাতিটি তিনি বিভিন্ন কাজের জন্য ভাড়া দিতেন।

“কয়েক মাস আগে এক বছর মেয়াদে ভাড়া দিয়েছিলাম নরসিংদীর কাজল খান নামে এক বক্তিকে। কাজল হাতিটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিয়ে, সার্কাস, গাছ টানা, শোভাযাত্রা প্রভৃতি কাজে খাটাতেন।”

কাজল হাতিটিকে গত শুক্রবার শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজার সড়কের ৫ নম্বর ব্রিজের পাশে রেখে ফোন দিয়ে জানালেও এরপর থেকে তাকে আর পাওয়া যাচ্ছে না বলে মালিক সিরাজের অভিযোগ।

কাজলের কাছে থাকার সময় হাতিটি কোনোভাবে আহত হয় বলে সন্দেহ প্রকাশ করে সিরাজুল বলেন, “ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খাবারের অভাব থাকার কথা বলে দুই মাসের জন্য কাজল হাতিটা আমার কাছে রাখতে বলেন। আমি রাজি হই।

“কাজল হাতিটাকে ট্রাকে করে কমলঞ্জ নিয়ে আসছিলেন। কিন্তু কেন তিনি তাকে পথেই ট্রাক থেকে নামালেন সেটা বুঝতে পারছি না। হাতিটা হয়ত আগেই কোনোভাবে আহত হয়েছিল। এবং সেকারণে কাজল তাকে ফেরত দিতে চেয়েছিলেন।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হঠাৎ খাবারের অভাব দেখা দেওয়ার বিষয়টিও রহস্যজনক বলে অভিযোগ করেন মালিক সিরাজুল ইসলাম।

তিনি ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়ে থানায় জিডি করবেন বলে জানান।

দাদার আমল থেকে তারা হাতি পালন করে আসছেন জানিয়ে সিরাজুল বলেন, একসময় তাদের আটটি হাতি ছিল। এখন আছে দুটি। অপরটির মালিক তার এক চাচা।

হাতিটি তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম জানিয়ে এর আগে তিনি বলেছিলেন, এর কিছু হয়ে গেলে তাদের পথে বসতে হবে।