রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির আসামি ৪ কর্মকর্তার পদোন্নতি

দুর্নীতি মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত চার কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়েছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2017, 12:57 PM
Updated : 17 July 2017, 01:17 PM

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার শাহজাহান আলী মণ্ডলকে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার, উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) এটিজিএম গোলাম ফিরোজকে অতিরিক্ত পরিচালক, সহকারী রেজিস্ট্রার মোর্শেদ উল আলম রনিকে উপ-রেজিস্ট্রার ও সহকারী পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) খন্দকার আশরাফুল আলমকে উপ-পরিচালক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর সভাপতিত্বে গত রোববার রাতে সিন্ডিকেটের ৫৩তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে সিন্ডিকেট সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য শাহ নেওয়াজ আলী জানান।  

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, বাছাই কমিটির সুপারিশের আলোকে সিন্ডিকেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে চার কর্মকর্তার পদোন্নতি অনুমোদন করা হয়েছে। তারা যে দুর্নীতি মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি, তা সভায় জানানো হয়নি।

“অভিযোগপত্র দিয়ে থাকলে এটা করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি সিন্ডিকেট সভায় জানানো উচিত ছিল।”

এ বিষয়ে উপাচার্য নাজমুল আহসানের ভাষ্য, পদোন্নতির জন্য তিন সদস্যের বাছাই কমিটিতে তিনি সভাপতি হিসেবে থাকলেও মামলার অভিযোগপত্রে ওই চার কর্মকর্তার নাম আসার বিষয়টি তার ‘জানা ছিল না’। 

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদন ছাড়াই দুর্নীতির মাধ্যমে ৩৪৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের অভিযোগে দুদকের রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবদুল করিম ২০১৩ সালে একটি মামলা করেন।

ওই চার কর্মকর্তার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল জলির মিয়াকে সেখানে আসামি করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একটি অংশের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ওই বছর ৪ মে উপাচার্য আব্দুল জলিল মিয়াকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

তদন্ত শেষে চলতি বছরের ১৯ মার্চ ওই পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন দুদকের উপ-পরিচালক মোজাহার আলী সরদার।

তদন্ত কর্মকর্তা মোজাহার আলী জানান, অভিযোগপত্র দাখিলের পর তার অনুলিপি তিনি উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার বরাবরেও পাঠিয়েছিলেন।

মোজাহার আলী বলেন, “ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামির পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগ নেই। আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের পর সংশ্লিষ্ট দপ্তর আসামিদের সাময়িক বরখাস্ত করবে। সেটা না করে পদোন্নতি দেওয়া ঠিক করেনি।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য নাজমুল আহসান দাবি করেন, বাছাই কমিটির অপর দুই সদস্য তাকে মামলার বিষয়টি জানাননি। 

“সিন্ডিকেট সভায় পদোন্নতি অনুমোদনের পর সোমবার বিষয়টি অবগত হই। এখন বিষয়টা আদালত দেখবে। তারা দোষী প্রমাণিত হলে সাজা পাবেন।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি তুহীন ওয়াদুদ বলেন, “দুর্নীতি মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত চার আসামির পদোন্নতি হল, এটা দুখঃজনক। পদোন্নতির নীতিমালা চরমভাবে ভঙ্গ করা হয়েছে। এ নিয়ে আমরা উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলব।”