বাস ভাংচুরের ছবি তোলায় রাবিতে সাংবাদিক পেটাল ‘ছাত্রলীগ’

বাস ভাংচুরের ছবি তোলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) এক সাংবাদিককে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2017, 09:13 AM
Updated : 10 July 2017, 09:55 AM

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান আহত সাংবাদিক আরাফাত রহমান।

তিনি ‘ডেইলি স্টার’ পত্রিকার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী সদস্য। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর দাবি সাদা পোশাকে ঘটনাস্থলে থাকা আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আরাফাতকে পিটিয়েছেন।

আরাফাত বলেন, “সোমবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহীগামী দেশ ট্রাভেলসের একটি বাসে ক্যাম্পাসে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয়। ভাড়া ও বাসে সিগারেট খাওয়া নিয়ে সুপারভাইজারের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়।

“বিষয়টি জানতে পেরে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়েল মেইন গেইটে ছাত্রলীগের ১৫/১৬ জন নেতাকর্মী জড়ো হয় এবং বাসটি সেখানে এলে ভাংচুর শুরু করে তারা।

তিনি বলেন, “মোবাইল ফোন দিয়ে ভাংচুরের ছবি তুলতে গেলে বাধা দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ৭/৮ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী মারধর করে।”

মারধরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আহমেদ সজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ আল হাসান লাবন ও বিজয় নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ করেন আরাফাত।

পরে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় বলে জানান তিনি।

মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, “কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাসের সুপারভাইজারের ঝামেলা হয়েছিল। আমি ও সভাপতি ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছি।

“ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নয়; ওখানে সিভিল ড্রেসে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্য তাকে মারধর করেছে বলে শুনেছি। আর যদি মারধরের সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকে তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে আহমেদ সজীব, হাসান লাবণ ও বিজয় দাবি করেন, ভাংচুরের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জড়িত ছিল না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

এ বিষয়ে মতিহার থানার ওসি হুমায়ুন কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বাসটিতে ভাংচুর করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।

সাংবাদিককে মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে সিভিল ড্রেসে কোনো পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। আর পুলিশ কেন তাকে মারধর করতে যাবে?

“বরং একজনকে মারধর করতে দেখে পুলিশ সদস্যরাই তাকে উদ্ধার করেছে।”

দেশ ট্রাভেলস এর রাজশাহী কাউন্টারের ইনচার্জ মাসুদ রানা বলেন, বাসের এফ১ সিটের যাত্রী ছিলেন বিজয়। গাড়ির মধ্যে ধূমপান করতে গেলে যাত্রীদের কথা ভেবে তাকে বাধা দেয় সুপারভাইজার। এসময় তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় বিজয়ের।

“এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গাড়িটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে পৌঁছলে তা থামিয়ে ভাংচুর করে।”