সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে সিলেটের সাত উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়েছে। কয়েকটি নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

মঞ্জুর আহমদ সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 July 2017, 03:14 PM
Updated : 4 July 2017, 01:39 PM

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যার কারণে জেলার ১৭৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ১৬১টি প্রাথমিক ও ১৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

সিলেট জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার জানান, কুশিয়ারা অববাহিকায় ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, ওসমানীনগর উপজেলার বন্যার পানি কিছুটা বেড়েছে। গোয়াইনঘাট উপজেলায় অপরিবর্তিত থাকলেও নতুন করে প্লাবিত হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী  সিরাজুল ইসলাম জানান, কুশিয়ারা নদীর পানি অমলসিদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। সুরমার পানিও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি জানান, নদীর পানি তীর উপচে প্রবেশ করায় প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ছয় উপজেলার সুরমা ও কুশিয়ারা অববাহিকায় নদীর তীরের দুই শতাধিক গ্রামের নিম্বাঞ্চল পানির নীচে আছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি এলাকা।

“ঘরবাড়ি, দোকান পাট ডুবেছে। তলিয়ে গেছে প্রায় তিন হাজার হেক্টর আউশ জমির ফসল।”

জেলা প্রশাসক জানান, বাড়ি-ঘর ডুবে যাওয়ায় অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠছেন। জেলায় নয়টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৮৯টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।

বন্যাদুর্গত এলাকায় মানুষের অভিযোগ, অনেকেই অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। ত্রাণের আশায় পথ চেয়ে থাকলেও দেখা মিলছে না কারও।

বালাগঞ্জের দেওয়ান বাজার এলাকার মন্তাজ আলী বলেন, “বানবাসী মানুষের পাশে কেউ নেই। বাড়ি-ঘর বন্যায় ডুবে গেছে। এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ বা সাহায্য পাইনি।”

বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দাল মিয়া বলেন, “বন্যায় যত মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে অনুপাতে ত্রাণ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই কেউ পাচ্ছে আবার কেউ পাচ্ছে না।”

জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, দুর্গত এলাকায় এ পর্যন্ত ১৩৭ মেট্রিকটন চাল ও প্রায় তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। দুর্গত মানুষদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হবে।

ফেঞ্চুগঞ্জের চণ্ডিপ্রসাদ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া হাবিবা আক্তার বলেন, “পানি ঢুকে বাড়ি-ঘর ধসে পড়েছে। কোনো আশ্রয় না থাকায় বাচ্চাদের নিয়ে এ স্কুলে আশ্রয় নিয়েছি। ঘরে খাবার নেই। কী করব, কোথায় যাব বুঝতে পারছি না।”