বাড়ি ফেরা হলো না প্রবাসী হালিমের  

সৌদি আবর থেকে দেশে আসতে পারলেও স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বাড়ি পৌঁছতে পারেননি বাগেরহাটের শরখোলা উপজেলার খুড়িয়াখালি গ্রামের হালিম আকন।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2017, 01:47 PM
Updated : 29 June 2017, 02:02 PM

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার গ্যাড়াখোলা এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মাইক্রোবাস যাত্রী হালিমসহ (৪৫) তার পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃত্যু হয়।

হালিম শরখোলার খুড়িয়াখালি গ্রামের জয়লাল আকন্দ ওরফে জয়নাল মাস্টারের ছেলে।

দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী আসমা বানু (৩৫), ছেলে সুজন আকন্দ (১৮) ও সিহাব আকন্দ (৯), শ্যালক বাদল হাওলাদারও (৪০) নিহত হন।

প্রাণ গেছে মাইক্রোবাস চালকেরও; আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

হালিম ও তার পরিবারের সদ্যদের মৃত্যুর খবরে খুড়িয়াখালি গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজন ও প্রতিবেশীদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে গ্রামের পরিবেশ।  

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিকে হালিমের বড় ভাই মতিয়ার রহমান আকন বলেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় আমার ভাই হালিমসহ তার পরিবারের মারা গেছে। কেউ জীবিত নেই। আল্লাহ এত বড় গজব কেন দিল জানি না। আমি ভাই হারানোর শোক সইতে পারছি না।”

হালিমের শ্যালকের স্ত্রী খাদিজা বানু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে থেকে এবার ছুটি পেয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকা আসেন হালিম। কিন্তু; বাড়ি ফেরা হলো না।

শরনখোলার সাউথখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, “এমন মৃত্যুতে স্বজন হারোনোদের সমবেদনা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই।”

বৃহস্পতিবার সকালে গোপালগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী “সেবা গ্রিনলাইন’ পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে গ্যাড়াখোলায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাগেরহাটের শরনখোলাগামী মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়।

এ সময় বাস ও মাইক্রোবাস রাস্তার পাশে একাট খাদে পড়ে যায়। মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে বাসের নিচে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান চালকসহ ছয় মাইক্রো আরোহী।

দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বিডিনিউজ টোওেয়ন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মাইক্রোবাসটি ‘রং’ সাইড দিয়ে যাচ্ছিল। বাসটি তাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় মাইক্রো সঠিক সাইডে আসার চেষ্টা করলে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।

গোপালগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সেটশন অফিসার নিয়ামূল হুদা বলেন, ছয়টি লাশ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। লাশগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।

এছাড়া মাইক্রোবাসটি বাসের নীচে চলে যাওয়ায় লাশ উদ্ধারে সময় লেগেছে। তবে দুর্ঘটনা কবলিত যান দুইটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।