ফেনীতে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা, অস্ত্র উদ্ধার

ফেনী সদরে ‘আধিপত্য বিস্তারের’ বিরোধে প্রতিপক্ষের লোকজন এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে।

নাজমুল হক শামীম ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2017, 10:52 AM
Updated : 28 June 2017, 12:18 PM

মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের মঠবাড়িয়ায় হামলা হয়। বুধবার তার মৃত্যু হয়।

নিহত আবদুল করিম ওরফে রেজাউল করিম (৩৭) ধর্মপুর ইউনিয়নের আবদুল হকের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন তাঁতী লীগের সহ-সভাপতি।

এর জেরে বুধবার দুপুরে একদল লোক স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এরপর পুলিশ দুই জনকে আটক করেছে।

এলাকাবাসী জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কয়েক বছর ধরে ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন শাখা ও সাবেক চেয়ারম্যান আজহারুল হক আরজুর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।

সাবেক চেয়ারম্যান আজহারুল হক বলেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতে মঠবাড়িয়া এলাকায় তার সমর্থক সাবেক যুবলীগ নেতা ও বর্তমান তাঁতী লীগ নেতা আবদুল করিমের উপর হামলা চালায় বর্তমান চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন শাখার লোকজন।

“হামলাকারীরা তাকে উপর্যপুরি কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। পরে উদ্ধার করে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।”

সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুধবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয় বলে জানান আজহারুল।

লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।  

ফেনী মডেল থানার ওসি রাশেদ খাঁন চৌধুরী জানান, বুধবার দুপুরে একদল লোক স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এতে ইউনিয়ন পরিষদের দুটি চেয়ার পুড়ে যায়।

“পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ছয় রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগজিনসহ মো. সালাউদ্দিন ও আনোয়ার হোসেন সোহেল নামে দুই যুবককে জনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।”

এদিকে, নিহত আবদুল করিমের বিরুদ্ধে রিকশা চালক শহিদুল্লাহ হত্যাসহ ছয়টি মামলা রয়েছে বলেও জানান ওসি রাশেদ।

ধর্মপুরের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান আরজু ‘বর্ডার লীগ’ ও ‘তাতী লীগ’ নামে দুটি সংগঠন করে ‘চোরাকারবারী ব্যবসা’ করে আসছেন। আবদুল করিম ওই দুটি কমিটির সহ-সভাপতি। গত মঙ্গলবার বর্ডার লীগ ও তাঁতী লীগের ব্যানারে ঈদ পুনর্মিলনী করতে গেলে পুলিশ তা বন্ধ করে দেয়।

মঙ্গলবার রাতে দুর্বৃত্তরা করিমকে হত্যা করে। করিম নিজেই চোরাকারবারীর সঙ্গে জড়িত, তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। হত্যাটি চোরাকারবারকে কেন্দ্র করে হয়েছে। এর সঙ্গে তার বা তার দলের সমর্থকদের সম্পর্ক নেই বলে দাবি শাহাদাতের।

সাবেক চেয়ারম্যান আজহারুল হক আরজুর অভিযোগ, তার দলের নেতা আবদুল করিমকে বর্তমান চেয়ারম্যান শাখার নির্দেশে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ উল্টো তার দলের দুই কর্মীকে আটক করে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের নাটক সাজিয়েছে।