বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে আরেকটি জিরাফের জন্ম

গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে দুইটি জিরাফের মৃত্যুর দেড় মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দুইটি জিরাফের জন্ম হয়েছে।

আবুল হোসেন গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2017, 02:40 PM
Updated : 26 June 2017, 02:40 PM

গত ১৩ জুন সকালে একটি মেয়ে শাবক এবং শনিবার (২৪ জুন) একটি পুরুষ শাবকের জন্ম হয়।

এ দুটি নিয়ে পার্কে জিরাফ পরিবারের সদস্য হলো ১০।

গত ১৭ মে অসুস্থ হয়ে দুইটি জিরাফের মৃত্যু হয়। এর আগে গত বছরের মাঝামাঝি সময়েও দুইটি জিরাফ মারা গেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিসুর রহমান বলেন, জন্ম নেওয়া শাবক ও তার মায়ের সুস্থতার কথা বিবেচনায় রেখে জিরাফ বেষ্টনী এলাকায় একজন ভেটেরিনারি চিকিৎসকের অধীনে সার্বক্ষণিক পরিচর্যা ও নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নতুন শাবকরা দিনভর মায়ের সঙ্গে জিরাফ বেষ্টনীতে ছোটাছুটি করে বেড়াচ্ছে। তাদের স্বাভাবিক খাবার গাজর, ছোলা, কলা, সবুজ ঘাস ও গমের ভূসি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

পার্কে কর্মরত ওয়াইল্ড লাইফ সুপারভাইজার সরোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ২০১৩  থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সময়ে সাফারি পার্কে চার দফায় দক্ষিণ অফ্রিকা থেকে ১২টি জিরাফ আনা হয়।

২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে দুইটি এবং ২০১৭ সালের ১৭ মে দুইটি মোট চারটি জিরাফ অসুস্থ হয়ে মারা যায়।

“বর্তমানে নবজাত দুটি শাবকসহ পার্কে চারটি পুরুষ এবং ছয়টি মেয়ে জিরাফ রয়েছে।”

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাচ্চাদের নিয়ে মা জিরাফ দুইটি বেষ্টনীতে অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে চলাফেরা করছে। মা ও শিশু জিরাফরা সুস্থ রয়েছে। বাচ্চাগুলো কিছুক্ষণ পর পর মায়ের দুধ পান করছে। খেলা করছে। জিরাফের বাচ্চাদের মায়ের দুধের পাশাপাশি অন্য খাবার খেতে অভ্যাস করা হচ্ছে।

প্রাণিবিজ্ঞনীরা জানান, সাধারণত একটি মা জিরাফ একটি বাচ্চা প্রসব করে। প্রতিটি জিরাফের গড় আয়ু প্রাকৃতিক পরিবেশে ২০-২৫ বছর এবং বেষ্টনীযুক্ত পরিবেশে প্রায় ২৮ বছর। পূর্ণবয়স্ক জিরাফের গড় ওজন ১৬শ থেকে ২৪শ পাউন্ড এবং বাচ্চা জিরাফের গড় ওজন হয় ১০০-১১৫ পাউন্ড। পূর্ণ বয়স্ক জিরাফের গড় উচ্চতা ১৯ ফুট।

সাফারি পার্কে দুই জিরাফ মৃত্যুর কারণ ‘ব্যাক্টেরিয়া’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক প্রকল্প পরিচালক সামসুল আজম জানান, ১৭ মে দুইটি জিরাফ মারা যাওয়ার প্রাথমিক কারণ হিসেবে ক্লস্ট্রিডিয়াম ব্যাক্টেরিয়াকে চিহ্নত করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সেন্ট্রাল ডিজিজ ইনভেস্টিগেশন ল্যাবরেটরি এই তথ্য দিয়েছে।  

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের চিকিৎসক নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এ ধরনের ব্যাক্টেরিয়া সাধারণত বৃষ্টির মধ্যে ও আর্দ্র মাটিতে বেশি বংশ বিস্তার করে। এরা তৃণভোজী প্রাণীদের বেশি আক্রমণ করে। এ জীবাণুর আক্রমণের ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে  প্রাণীর মৃত্যু হতে পারে। সাপ, বেজী, পানি ইত্যাদির মাধ্যমে এ জীবাণু বিস্তার লাভ করতে পারে। তবে আগাম প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।