মেয়ের জামা-স্যান্ডেল নিয়ে ফেরা হলো না সাদ্দামের

ঈদে মেয়ের জন্য লাল জামা আর হিল স্যান্ডেল নিয়ে বাড়ি ফেরার কথা ছিল লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার লতাবর গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের; কিন্তু রংপুরে ট্রাক উল্টে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি।

লালমনিরহাট প্রতিনিধিআনিছুর রহমান লাডলা, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2017, 11:49 AM
Updated : 24 June 2017, 12:01 PM

সাদ্দামের সাত বছর বয়সী মেয়ে শারমিন আক্তার সাথী বলে, “আব্বু আমার জন্য লাল পিড়ান আর হিল আনবে। আমাদের সবার জন্য কাপড় কিনছে। কিন্তু আসার পথে গাড়ি উল্টে পড়ছে।”

শনিবার দুপুরে নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের এ কথা বলে শারমিন।

ভোরে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় সিমেন্টের ট্রাক উল্টে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হন অন্তত ১১ জন। ঈদের দুদিন আগে ৫৪ জন যাত্রী নিয়ে সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকটি ঢাকা থেকে লালমনিরহাটে যাচ্ছিল।

শারমিন আক্তার সাথী (সামনে)

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন লতাবর গ্রামের আইউব আলীর দুই ছেলে সাদ্দাম হোসেন ও আলমগীর হোসেন। আহত হয়েছেন সাদ্দামের স্ত্রী শরিফা খাতুন ও আলমগীরের স্ত্রী খাদিজা বেগম। গাজীপুরে ‘ইন্টারম্যাক্স’ নামে একটি গার্মেন্ট কারখানায় চাকরি করতেন তারা।

এ দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১২ জনেরই বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।

সাদ্দামের মা জরিনা বেগম বলেন, শুক্রবার বেলা ২টার দিকে গাড়িতে উঠার সময় ফোনে কথা হয়েছিল দুই ছেলের সঙ্গে। সাদ্দাম বাড়ির সবার জন্য ঈদের জামা-কাপড় কিনেছে বলে জানায়।

কিন্তু সেই কাপড় নিয়ে আর ফেরা হলো না সাদ্দামের- বলে আহাজারি করছেন তিনি।

তাদের আরেক ভাই জাহাঙ্গীর মোবাইল ফোনে বলেন, শনিবার দুপুরে তিনি দুই ভাইয়ের লাশ নিতে পীরগঞ্জ গেছেন। সেখানে সাদ্দামের শ্যালক দেলোয়ার আর দেলোয়ারের চাচাত ভাই মনির হোসেনেরও লাশ রয়েছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা শাহীনুর আলম বলেন, পীরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে কালীগঞ্জের ১০ জন ও আদিতমারী উপজেলার দুইজন রয়েছেন। তাদের লাশ নিয়ে তিনি কালীগঞ্জ আসছেন।