শোলাকিয়াকে ছাড়ানোর আশা গোর-এ-শহীদে

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়াকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশায় এবার দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ মাঠে ঈদ জামাতের প্রস্তুতি চলছে।  

দিনাজপুর প্রতিনিধিমোর্শেদুর রহমান, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2017, 08:47 AM
Updated : 24 June 2017, 01:44 PM

দিনাজপুর শহরে অবস্থিত এ ঈদগাহে একসঙ্গে পাঁচ লাখ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত হয় কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়।  ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ঈদ জামাতে এখানে সোয়া লাখ লোক নামাজ আদায় করে বলে গবেষকদের ভাষ্য। সেই সোয়া লাখ কালক্রমে পরিবর্তন হয়ে ‘শোলাকিয়া’ হয়েছে।

মাঠ ও মাঠের বাইরে আশপাশ এলাকা মিলে এখানে আড়াই থেকে তিনলাখ লোক নামাজ আদায় করেন। 

দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মিনার কেন্দ্রিক মাঠের আয়তন ২০ থেকে ২২ একর। তবে মাঠের মধ্যে আরও কিছু স্থাপনা অপসরণের কাজ বাকি আছে, যা শেষ হওয়ার পর পুরো মাঠের আয়তন হবে ৬৫ একর। 

গোর-এ-শহীদ মাঠ সম্পর্কে দিনাজপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য হুইপ ইকবালুর রহিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটি এই উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগা মাঠ। এখানে একসঙ্গে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন।”

এটিকে আরও দৃষ্টিনন্দন করতে এবং নামাজিদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা নিশ্চিত করতে আগামীতে আরও কিছু কাজ করা হবে বলে জানান তিনি।

দিনাজপুর জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকিউল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দিনাজপুর জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে এটি নির্মাণে প্রায় তিন কোটি ৮০ লাখ টাকা খরচ হয়।

এর মিনারে সুদৃশ্য মূল মেহেরাব ও গম্বুজ ছাড়াও ৩২টি দৃষ্টিনন্দন স্ক্রিন  (ভেন্টিলেশন) রয়েছে। ঈদগা মাঠের পশ্চিম অংশ দিয়ে প্রবেশের জন্য মিনারের ভিতরে চারটি প্রবেশে পথ রয়েছে।

এবারের ঈদ নামাজের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হলেও নামাজ আদায়ের জন্য অজুখানাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে বলে জানান জাকিউল।

সাংসদ ইকবালুর রহিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ ঈদগাহের মিনারে ৫২টি গম্বুজ রয়েছে। প্রধান গম্বুজের সামনে রয়েছে ৪৭ ফুট উচ্চতার মেহরাব, যেখানে ইমাম দাঁড়াবেন। এছাড়া রয়েছে ৩২টি আর্চ। 

১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ৭ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠা করা হয় শোলাকিয়া ঈদগাহ।

স্থানীয় গবেষকদের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৮২৮ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন বলে মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখি মাঠ’। সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে পরিণত হয়েই এসেছে আজকের ‘শোলাকিয়া’।

বিশাল এই মাঠে কাতার রয়েছে ২৬৫টি। প্রতি কাতারে ৫ শতাধিক মুসল্লি নামাজে অংশ নিতে পারেন। তবে মাঠের বাইরে আশে পাশের এলাকা জুড়ে জামাতে অংশ নেওয়া মুসল্লি মিলিয়ে এই সংখ্যা আড়াই থেকে তিন লাখ ছাড়িয়ে যায়।