উত্তরের পথে ২১ কিলোমিটারে ধীরগতি

উত্তরের পথে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার সড়কে অতিরিক্ত চাপের কারণে গাড়ি চলছে থেমে থেমে; এছাড়া একটা ঝুঁকিপূর্ণ সেতুকেও ধীরগতির জন্য দায়ী করছে পুলিশ।

গাজীপুর প্রতিনিধিসিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2017, 04:42 AM
Updated : 24 June 2017, 07:08 AM

হাটিকুমরুল হাইওয়ে পুলিশের সার্জেন্ট আবদুল গনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার রাস্তা দুই লেইনের।

“এখান দিয়ে চলছে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগসহ খুলনা বিভাগেরও কয়েকটি জেলার গাড়ি। ঈদ উপলক্ষে গাড়ির সংখ্যাও অধিক। এ কারণে এই ২১ কিলোমিটারে গাড়ি চলছে থেমে থেমে। তবে কোথাও কোনো জট নেই।”

তাছাড়া রোড ডিভাইডার না থাকায় মাঝেমধ্যেই দু-একজন চালক নিয়ম ভেঙে বিপরীতমুখী লেইনে ঢুকে তাড়াতাড়ি চলার চেষ্টা করায় মাঝেমধ্যে সমস্যা হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ

তবে সার্জেন্ট গনি বলেন, পুলিশ তাদের নিয়ম মেনে চলতে চেষ্টা চালাচ্ছে। আর হাটিকুমরুল থেকে গাড়িগুলো তিন দিকে তিনটি সড়কে বিভক্ত হওয়ায় এসব সড়কে আর জট লাগছে না।

এছাড়া বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে হাটিকুমরুলের পথে ঝুঁকিপূর্ণ নলকা সেতুকে ধীরগতির জন্য দায়ী করছে পুলিশ।

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ দাউদ বলেন, ঈদ উপলক্ষে গাড়ির চাপ অতিরিক্ত, তার ওপর পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ নলকা সেতুতে চলতে হচ্ছে আরও ধীরগতিতে। এ কারণে এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

আর এর প্রভাব পড়ছে ঢাকা পর্যন্ত পুরো মহাসড়কে।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মাহবুব আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পারে গাড়ি টানছে না বলে টাঙ্গাইলেও তার প্রভাব পড়ছে। তবে কোথাও কোনো জট নেই।

“ভোরের দিকে এলেঙ্গা-ভুয়াপুর লিংকরোডে বাসের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষ, সকাল ৯টায় চরভাবলাসহ মোট ছয় জায়গায় ছয় ঘটনায় ছয়টি গাড়ি বিকল হয়। এতে এসব এলাকায় ওই মুহূর্তে জট সৃষ্টি হলেও কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিকল গাড়ি সরিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়।”

টাঙ্গাইল

যাত্রীরাও ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত অসহনী জট পাননি বলে জানান।

ঢাকার গাবতলী থেকে সকাল সাড়ে ৯টায় বাসে উঠেছেন জানিয়ে রংপুরের সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনি গাজীপুরের চন্দ্রায় ঘণ্টা খানেক জটে পড়লেও বাকি রাস্তা ফাঁকাই ছিল।

কৌশিক এন্টারপ্রাইজে করে ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জ যাচ্ছেন জানিয়ে আনিসুর রহমানও একই তথ্য জানালেন।

পুলিশ সুপার মাহবুব বলেন, “কোথাও কোনো গাড়ি দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না বলেই জট লাগতে পারছে না। পুরোটা রাস্তাই পুলিশ সদস্যদের নজরে রয়েছে। আমি নিজেও সারাক্ষণ মহাসড়কে ঘুরে বেড়াচ্ছি।”

অপরদিকে বঙ্গবন্ধু সেতু টোল প্লাজা এলাকায় রয়েছে গাড়ির দীর্ঘ লাইন। এ কারণে সেতুর পূর্ব পারে পাঁচ থেকে দশ কিলোমিটারে মাঝেমধ্যে গাড়ি চলছে ধীরগতিতে।

এর কারণ ওই নলকা সেতু বলেই মনে করছেন যানচালক ও পুলিশ সদস্যরা।

গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাসে শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার ব্যবস্থাপক প্রশান্ত কুমার রায় বলেন, সিরাজগঞ্জে ঝামেলার কারণে গাড়িঘুড়া সময়মতো আসছে পারছে না বলে আমরা এখান থেকে সময়মতো ছাড়তেও পারছি না।

“এ কারণে আমরা এখন অগ্রিম কোনো টিকিটও বিক্রি করছি না।”

শুক্রবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা তাদের একটি বাস শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় এসে পৌঁছায়, যা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা বেশি।

ভোগড়া বাইপাসের তানজিলা ট্রাভেলসের কাউন্টার ব্যবস্থাপক ইব্রাহিম বলেন, “টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত গাড়ি ফেরার পথে বিলম্ব হচ্ছে।”