ঈদযাত্রার পথে রংপুরে নিহত ১৬

ঈদের আগে বাড়ি ফেরার পথে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় সিমেন্টের ট্রাক উল্টে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের অধিকাংশই পোশাক শ্রমিক। এ দুর্ঘটনায় আরও ১১ জন আহত হয়েছেন।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2017, 02:27 AM
Updated : 24 June 2017, 11:58 AM

পীরগঞ্জের কলাবাড়ি এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে শনিবার ভোর সাড়ে ৫টায় হতাহতের এ ঘটনা ঘটে বলে জানান পীরগঞ্জ থানার ওসি রেজাউল করিম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে ৫৪ জন যাত্রী একটি সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকে করে ঢাকা থেকে লালমনিরহাটে বাড়ি ফিরছিল। ভোরে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থলে ১১ জনকে মৃত উদ্ধার করে।

আহত ১৬ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হলে তাদের মধ্যেও পাঁচজন মারা যান।

হতাহতদের বেশির ভাগরে বাড়ি লালমনিরহাট হলেও কুড়িগ্রাম, ঝিনাইদহ ও ময়মনসিংহেরও কয়েকজন রয়েছেন।

পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত আটজনকে এখানে ভর্তি করা হয়। তাদের চিকিৎসা দেওয়ার সময় পাঁচজন মারা যান।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন তিনজন হচ্ছেন - নিহত আলমগীরের স্ত্রী খাদিজা, নিহত মনিরের স্ত্রী আফরোজা ও নিহত জসিমের স্ত্রী রহিমা।

এছাড়া রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আটজনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার পরিচালক মউদুদ আহমেদ।

তারা হলেন - জমিলা(৬০), ময়না(৩০), মমিনুল(৩৪), খলিল(২৫), দুলাল (৩০), আব্দুল মতিন (২৫), মোজাফফর (২৫) ও রহিমা বেগম (৩৮)।

এদের হাত-পায়ের চামড়া ছড়ে গেছে, কেউ কেউ মাথায় আঘাত পেয়েছেন, জানিয়েছেন পরিচালক মউদুদ আহমেদ।

বদরগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই হাফিজুর রহমান বলেন, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী নিহতরা সবাই ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। আর তাদের বাড়ি লালমনিরহাটে।

নিহতদের মধ্যে ট্রাকের চালক ও সহকারী আছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

এদিকে এখন পর্যন্ত নিহত ১৬ জনের মধ্যে ১৫ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তারা হলেন- লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার লতাবর গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে আলমগীর হোসেন(৩০), তার ভাই সাদ্দাম হোসেন (২৪), ডোংগাগাছা গ্রামের মনোয়ারের ছেলে মনির হোসেন(২২), সৈয়দ আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন(২৫), চাপারহাট গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মজনু মিয়া (২২), মন্টু মিয়ার মেয়ে সুবর্ণা (২২), উত্তর বত্রিশহাজারী গ্রামের আহমেদ আলীর ছেলে কোহিনূর ইসলাম (৪০), আশরাফুল হকের ছেলে শাহীদুল ইসলাম (৩৫), লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার মহিষখোঁচা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে রবিউল আলম (২৮), বড়ভিটা গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে আজিজুল ইসলাম(২২), বালাপাড়া গ্রামের শাহজামানের ছেলে মহসীন আলী(২৫), কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার সোনাগাছা গ্রামের নওয়াব সরকারে মেয়ে নাশিদা আখতার(২৮), ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার মিমগ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে আনিসুজ্জামান (৪০) ও তার স্ত্রী সামসুন্নাহার (২৪) এবং ময়মনসিংহের ভালুকা গ্রামের সিরাজউদ্দিনের ছেলে আনসার সদস্য জসিম উদ্দিন(৪২)।

এছাড়া এক যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি বলে জানান এসআই হাফিজুর।

স্পিকারের শোক

সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া ও চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনার কথা জানিয়েছেন।