বেহাল মহাসড়ক, অলস ফেরিঘাট

শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কের বিরাট অংশজুড়ে খানাখন্দে পূর্ণ থাকায় যান চলাচল আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।

কে এম রায়হান কবীর শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2017, 10:46 AM
Updated : 23 June 2017, 11:30 AM

শরীয়তপুর সদরের আঙ্গারিয়া বাজার থেকে জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার আলুর বাজার ফেরিঘাট পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার মহাসড়ক যান চলাচলের প্রায় অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।

দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে এ রুটে চলাচলকারী যানবাহনগুলো হয় বন্ধ রয়েছে অথবা অন্য সড়কে চলছে। এ পথে চলাচলকারী ২১ জেলার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঈদে ঘরমুখী মানুষদের ভোগান্তি হলো নতুন সংযোজন।

বিআইডব্লিউটিসি জানিয়েছে, এ সড়ক দিয়ে যানবাহনের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ৫ থেকে ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। এতে চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরিঘাট কেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে। বেকার হয়ে পড়েছেন বহু শ্রমিক।

ঘাট শ্রমিক ও বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।

এ কারণে চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরিঘাটের একটি ফেরি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এঘাটে প্রতিদিন পাঁচ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব আদায় কম হচ্ছে।

আলুর বাজার ফেরিঘাটের ব্যবসায়ী সানু সেক, রফিকুল ইসলাম, মোক্তার দিদার জানান, শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন খুলনা-চট্টগ্রামসহ দক্ষিণাঞ্চলের মোট ২১টি জেলার ভারী যানবাহন চলাচল করে। ২০১৪ সালে রাস্তাটি সংস্কার করা হলেও বছর না ঘুরতেই আবার যান চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। পুরো রাস্তাই খানাখন্দে ভরা। প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

শুধু যাত্রীবাহী যানবাহন নয় মালবাহী গাড়িগুলোও চলাচল করছে না। প্রতিদিন যেখানে ৭/৮ শত গাড়ি এ রুটে ফেরি পারাপার হতো, সেখানে প্রতিদিন গড়ে ১০০ গাড়িও পার হয় না বলে তাদের ভাষ্য।

এ মহাসড়ক ব্যবহারকারী খুলনা ও চট্টগ্রামগামী বেশিরভাগ গাড়ি ভোলা ও চরজানাযাত ফেরিঘাট হয়ে দীর্ঘ ঘুরপথে যাতায়ত করছে।

আলুর বাজার ফেরিঘাটে অবস্থানরত ট্রাক চালক আক্কাস মিয়া বলেন, “জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তাটি পার করে এসেছি। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা কম হওয়ায় এখন ফেরি ছাড়ছে না সময়মতো।”

বাসযাত্রী রোকেয়া বেগম বলেন, “ফেরি ছাড়ার আশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বসে আছি, কিন্তু আরও গাড়ি না আসায় ছাড়ছে না।”

আলুর বাজার ফেরিঘাটের টার্মিনাল সুপার এসিস্টেন্ট আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর যান চলাচল অনেক কম। রাস্তার অবস্থা খারাপ থাকায় আর প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার কারণে এ রুটে গাড়ি চলাচল আগের তুলনায় অনেকাংশ কমে গেছে।

“গত বছরও চাদঁপুরের হরিণা ঘাট আর আলুর বাজার ঘাট থেকে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৬ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা আদায় হতো। কিন্তু এ বছর দুই ঘাট মিলে এক লাখ টাকাও আদায় হচ্ছে না।

“যেখানে প্রতিদিন আমরা হাজারেরও বেশি যানবাহন পারাপার করতাম, সেখানে ৫০-৬০টি গাড়ির বেশি পারাপার হয় না।”

আলুর বাজার ফেরিঘাটে দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসি এসিসেন্ট ম্যানেজার আব্দুস সাত্তার বলেন, রাজস্ব কমে যাওয়ার কারণ হচ্ছে রাস্তার খারাপ অবস্থা।

“ফেরি সার্ভিস সবসময় অব্যাহত থাকলেও রাস্তার অবস্থা খারাপ থাকায় যানবাহন পারাপার তুলনামূলকভাবে কম। এ কারণে একটি ফেরি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ দাসগুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।