মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে ২৪৭ জন বাদ, গোপালগঞ্জে মানববন্ধন

মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে গোপালগঞ্জের ভাতাপ্রাপ্ত ২৪৭ জন বাদ পড়ায় মানববন্ধন করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2017, 08:39 AM
Updated : 22 June 2017, 08:39 AM

‘গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধোদের পক্ষ’- ব্যানারে বুধবার বেলা ১১টা থেকে জেলা প্রেসক্লাবের সামনে একঘণ্টার এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।

পরে জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. মজিবর রহমান অভিযোগ করেন, মুক্তিযোদ্ধার গেজেট, মুক্তিবার্তা, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের সনদে নাম থাকার পরও যাচাই বাছাই কমিটি ‘দুর্নীতির মাধ্যমে’ ২৪৭ জনকে তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধারা ওই কমিটির সদস্যদের ‘টাকা দেননি বলেই’ তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মজিবর। 

“গ্রুপিং ঠিক রাখতে ও  প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যও অনেককে তালিকা থেকে ‘অবৈধভাবে’ বাদ দেওয়া হয়েছে।  যারা টাকা দিয়েছে তাদের নাম তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।”

মজিবর বলেন, কাগজপত্র নেই এমন ৫৫২ জনকে যাচাই বাছাই কমিটি সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করেছে।

মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডারসহ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে যাচাই বাছাই কমিটি করে বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তিনি।

তালিকা থেকে বাদ পড়া গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাইককান্দি গ্রামের সাহাদাত শেখ বলেন, “আমি ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়েছি। গোপালগঞ্জের পাইককান্দি, তালা বাজার, সুকতাইল, মানিকহারসহ বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নিয়েছি।

“গেজেট ও মুক্তিবার্তায় আমার নাম রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর সনদ আছে। আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই।”

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বিজয়পাশা গ্রামের মো. আলেক সরদার বলেন, “আমি ৮ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছি। দেশ স্বধীন হওয়ার পর রক্ষী বাহিনীতে ছিলাম। সেনাবাহিনীতে চাকরি করেছি। সব তালিকায়  আমার নাম রয়েছে।

“গত ২২ মে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার যাচাই বাছাই শেষ হয়। ১৫ জুন তালিকা প্রকাশ করে। এ তালিকায় ২৪৭ জন প্রকৃত ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার নাম বাদ পড়েছে ।”

তিনি প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত নিরপেক্ষ লোক দিয়ে যাচাই বাছাই করার দাবি জানান।

মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বছাই কমিটির সদস্য গোপালগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা  যাচাই বছাইয়ের ক্ষেত্রে সরকার একটি নীতিমালা করেছে এবং সে অনুযায়ী যাচাই বাছাইয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

“এ ক্ষেত্রে যারা নীতিমালার মধ্যে পড়েছেন, তারা তালিকাভুক্ত হয়েছেন। যারা এর আওতায় পড়েননি তাদের যাচাই বছাইয়ে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এখানে গ্রুপিং বা প্রতিহিংসার কোনো বিষয় নেই।”

তিনি বলেন, ওই ২৪৭ জনের ভাতা এখনও চালু আছে। যাচাই বছাই চূড়ান্ত হলে বাদ পড়াদের ভাতা বন্ধ হবে।