স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে কলেজ শিক্ষক গ্রেপ্তার

চাঁদপুরের মতলবে ‘যৌতুকের দাবিতে’ স্ত্রীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগে এক কলেজ শিক্ষককে আটক করা হয়েছে।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2017, 10:25 AM
Updated : 18 June 2017, 10:26 AM

শহরের তালতলা এলাকা থেকে শনিবার রাতে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশে দেয় বলে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি ওয়ালী উল্লাহ জানান।

গ্রেপ্তার মুসলিম সরদার মিশু লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সরকারি জসিমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। তার বাড়ি মতলব দক্ষিণ উপজেলার নলুয়া গ্রামে।

আহত স্ত্রী কুলসুমা বেগমকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি চাঁদপুর জেলা জজ আদালতের আইনজীবী।

হাসপাতালের চিকিৎসক নূরে আলম বলেন, কুলসুমাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

কুলসুমা বলেন, “লালমনিরহাট থেকে বদলি হয়ে আবার চাঁদপুর আসার জন্য মিশু আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করলে আমি দিতে অস্বীকৃতি জানাই।

“শুক্রবার বিকালে মিশু আমাকে ফোন করে বলে, আমি লালমনিরহাটে যাচ্ছি। যাওয়ার আগে মেয়েকে একটু দেখতে চাই। তখন আমি তাকে বাসায় আসতে বলি।

“সন্ধ্যার দিকে ভাই আব্দুল হকসহ বাসায় ঢুকেই আমাকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে আমি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলি।”

তার বড় ভাই হানিফ খন্দকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আট বছর আগে বোনের সঙ্গে মিশুর বিয়ে হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন সময় যৌতুকের দাবিতে তাকেকে চাপ দিয়ে আসছিল মিশু।”

এর আগে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হলেও মিশু আবারও টাকা দাবি করে তার বোনকে মারধর করতেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। 

হানিফ বলেন, “নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ছয় মাস আগে কুলসুমা তার এক বছর বয়সী সন্তানকে নিয়ে শহরের একটি বাড়িতে আলাদা থাকতে শুরু করে।

“এর মধ্যেই চাঁদপুর সরকারি কলেজে কর্তব্যরত অবস্থায় তিন ছাত্রীকে নেশাদ্রব্য খাইয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে মিশুর বিরুদ্ধে। ওই ছাত্রীদের অভিযোগে তাকে লালমনিরহাটে বদলি করা হয়।”

হুমায়ূন কবির সুমন নামে কুলসুমাদের এক আত্মীয় বলেন, “মারধরের পর অচেতন অবস্থায় কুলসুমাকে অটোরিকশায় করে  বারঠালিয়া গ্রামে তাদের বাড়ি নিয়ে যায় মিশু। সেখানে নিয়ে আবার মারধর করে এবং এতে তার ভাই সহায়তা করেন।

পরে খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিশুর বাবা কাজীমুদ্দিন সরদার বলেন, “তবে ঘটনাটি শুনেছি। তবে আমার ছেলে ও তার স্ত্রীর মধ্যে কী হয়েছে তা জানি না।”

এ ঘটনায় কুলসুমা বাদী হয়ে স্বামী মিশুসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন বলে জানান ওসি।