সদর উপজেলা যুবলীগের সদস্য এবং সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সাহাদাত হাওলাদারকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সাহাদতের কনুই ও নিতম্বে কালশিটে দেখা গেলেও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ বলেছে, ওই দাগ অন্য কোনোভাবে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে চাঁদপুর শহর থেকে শহরের গুয়াখোলা এলাকায় বাসায় ফেরার পথে গুয়াখোলা ক্রীড়া চক্রের সামনে থেকে সাহাদাতকে আটক করে ডিবি পুলিশ। এরপর শনিবার তাকে পুলিশি পাহারায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সাহাদাতের বাবা সিরাজ হাওলাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পিটিয়ে পুরো পাছা বিবর্ণ করে ফেলেছে। কনুইর উপরিভাগেও দাগ হয়ে গেছে। এমন অমানুষিক নির্যাতনের পরও তাকে চিকিৎসা না করিয়ে হাজতে পাঠিয়ে দিয়েছিল। শনিবার আদালত তাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছে।”
গ্রেপ্তারের পরদিন আদালাতের মাধ্যমে সাহাদতকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মোস্তফা কামাল জানান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাহাদাত সাংবাদিকদের বলেন, তাকে পুলিশ সুপারের কথা বলে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে পুলিশ সুপারকে তিনি সেখানে দেখেননি। পরে ডিবির ওসি মোস্তফা কামাল নিজে এসে তাকে মারধর শুরু করেন।
“আমাকে মাটিতে উপুড় করে শুইয়ে মারধর করা হয়। একজন পুলিশ আমার পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে ছিল, আর ওসি আমার পাছায় লাঠি দিয়ে মারছিল। মারতে মারতে লাঠি ভেঙে গেলে হকিস্টিক দিয়ে মেরেছে। একপর্যায়ে আমি জ্ঞান হারাই।”
সাহাদাতের স্ত্রী আসমা নূর বলেন, “মানুষ মানুষের ওপর এমন নির্যাতন চালাতে পারে ভাবা যায় না। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। দোষী পুলিশের শাস্তি চাই।”
হাসপাতালের চিকিৎসক ফয়সাল আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাহাদাতের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার সুস্থ হতে সময় লাগবে।”
চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান এ ঘটনায় ওসি মোস্তফা কামালের বিচার দাবি করেছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ওসি মোস্তফা যে অত্যাচার করেছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এর যদি সঠিক বিচার না হয় তাহলে যা যা করা দরকার তা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ করবে।”
তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মোস্তফা কামাল বলেন, “তাকে নির্যাতন করা হয়নি। দাগ হয়ত অন্য কোনোভাবে হয়েছে, তাকে কোনো মারধর করা হয়নি।”
পুলিশ অভিযোগ তদন্ত করে দেখছে জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, “আমাদের কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। বিষয়টি এসপি স্যারের নজরে আসায় তিনি আমাকে অনুসন্ধান করার দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি বিষয়টি দেখছি।”