পাহাড়ে নিহত সেনাসদস্য শাহীনের বাড়িতে শোক  

রাঙ্গামাটির মানিকছড়িতে পাহাড় ধসে নিহত সেনাসদস্য শাহীন আলম চঞ্চলের বাড়িতে এখন শুধুই কান্না।  

জিয়া শাহীন-সাদেকুল ইসলাম, বগুড়া ও নওগাঁ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2017, 03:57 PM
Updated : 14 June 2017, 03:57 PM

মঙ্গলবার বিকালে শাহীনের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ধনতলা গ্রামের বাড়িতে মা-বাবা ও বোনসহ পরিবারের সদস্যদের আহাজারি শুরু হয়।

বুধবার হেলিকপ্টারযোগে বাড়িতে তার মরদেহ পৌঁছানোর কথা থাকলেও বৃষ্টিপাত ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে কোনো সময় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে তার মরদেহ ধনতলা গ্রামে পৌঁছানো হবে বলে প্রশাসন ও স্বজনদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

ধনতলা গ্রামের সরোয়ার্দীর একমাত্র ছেলে শাহীন আলম ওরফে চঞ্চল ২০০৬ সালে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি ২০১২ সালে পুলিশ সদস্য মোরশেদা খাতুন চমনকে বিয়ে করেন। তাদের আবু তাহা নামে ৫ বছরের এক ছেলে রয়েছে। মোরশেদা খাতুন বর্তমানে ময়মনসিংহে র‌্যাবে কর্মরত রয়েছেন।

চার ভাইবোনের মধ্যে শাহীন আলম দ্বিতীয় এবং একমাত্র ছেলে।

তার বাবা সরোয়ার্দী বলেন, মঙ্গলবার সকালে ছেলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তার কথা হয়। বেলা ৩টার দিকে বগুড়া সেনানিবাস থেকে মোবাইল ফোনে জানতে পারেন তার ছেলে পাহাড় ধসে নিহত হয়েছেন।

একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শাহীনের মা সেলিনা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কোনোভাবেই তাকে সান্ত্বনা দেওয়া যাচ্ছে না। মায়ের আহাজারিতে আশপাশের সবার চোখ সজল হয়ে ওঠে।

বুধবার বিকাল ৩টায় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মরদেহ আদমদীঘির নসরতপুর ডিগ্রি কলেজ মাঠে নামানোর জন্য প্রস্ততি গ্রহণ করা হয়। কিন্তু বৃষ্টিপাত ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি।

ফলে মাঠে উপস্থিত সেনাবাহিনীর ঈর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ শতশত নারী পুরুষ দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ফিরে যান।

আদমদিঘী থানার ওসি শওকত কবির জানান, শাহীন আলমের মরদেহ সেনা হেফাজতে গ্রামের বাড়ি পৌঁছানো হবে।

মা সেলিনা বেগম বলেন, “তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে আমার সংসার। ছেলেটি ছিল উপার্জনের একমাত্র ব্যক্তি। ছেলের ইচ্ছা ছিল আমাকে একটি পাকা বাড়ি করে দিবে। আড়াই শতক জমি আমার সম্বল। ওই আড়াই শতকের উপর মাটির একটি ঘর করে বসবাস করছি।”  

ধনতলা গ্রামের আছির উদ্দিনসহ কয়েকজন জানান, দিনমজুর সরওয়ার্দীর একমাত্র ভরসা ছিল তার ছেলে। ছেলেও বাবাকে দেখাশোনা করতেন। তার পরিবারের আরও তিন মেয়ে রয়েছে। তাদের বিয়ে হয়েছে।