পরিবারের সঙ্গে ঈদ করা হলো না আজিজুলের

চারমাস পর ছুটিতে ময়মনসিংহে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে আসার কথা ছিল সদস্য ময়মনসিংহের আজিজুল হকের। কিন্তু পাহাড় ধসে পাল্টে গেছে সব; তার পরিবারে এখন শোকের মাতম।

ইলিয়াস আহমেদ ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2017, 03:40 PM
Updated : 14 June 2017, 03:40 PM

মঙ্গলবার পাহাড় ধসে রাঙামাটি শহরের অদূরে মানিকছড়িতে নিহত চার সেনা সদস্যর একজন হলেন কর্পোরাল আজিজুল হক।

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের মগটুলা তরফপাসাইল গ্রামের প্রয়াত আমির উদ্দিন মুন্সীর ছেলে তিনি। আজিজুল ছয় ভাই-বোনদের মধ্যে তৃতীয়।

মগটুলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খুবই অমায়িক ছিলেন আজিজুল। অকাল মৃত্যুতে আমি ও এলাকাবাসী হতবাক। আমরা শোকে স্তব্ধ। তার লাশের অপেক্ষায় আছি।”

বৃহস্পতিবার আজিজুলের লাশ গ্রামে পৌঁছার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।

বুধবার আজিজুলের বাড়ি দিয়ে দেখা যায়, বাড়ি সামনে লোকের জটলা। বাড়ির থেকে আসছে কান্নার শব্দ। তার স্বজনরা মাতম করছে। উঠানে প্রস্তুতি চলছে আজিজুলের দাফনের।

আহাজারি করছেন আজিজুলের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। মায়ের অবস্থা দেখে চোখ মুচছে আজিজুলের ছেলে শাকিল আহমেদ (১০) ও শাহনাজ আজিজ রিতা (১৩)।

আনোয়ারা বলেন, “সোমবার রাতে আমার সঙ্গে মোবাইল ফোনে তার শেষ কথা হয় । ২২ জুন ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ গিয়ে পরিবার ও স্বজনদের জন্য কেনাকাটা করার কথা ছিল। আর তার আসা হল। স্বামীর আর সেই আশা পূরণ হলো না।”

আজিজুলের বড় ভাই আব্দুল হাশিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ১৯৯৫ সালে আজিজুল সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। আগামী বছরের এপ্রিলে অবসরে যাওয়ার কথা ছিল তার। চার মাস আগে একবার বাড়ি এসেছিল সে।

“অবসরের পেনশনের টাকা দিয়ে ব্যবসা করার ইচ্ছে ছিল আমার ভাইয়ের। তার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই আমাদের ছেড়ে চলে গেলে। ঈদও করা হল না আমাদের সঙ্গে।”

আজিজুলের স্ত্রীকে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়ার দাবিও জানান তিনি।

“আনোয়ারা বেগম শিক্ষিত নারী। তাকে যেন সরকার যোগ্যতা অনুযায়ী একটি চাকরি দেয়।”