শিশু ‘ধর্ষণ চেষ্টার’ ঘটনা সালিশে মীমাংসা

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় এক শিশুকে ‘ধর্ষণের চেষ্টার’ ঘটনা সালিশে মীমাংসা করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2017, 03:54 PM
Updated : 13 June 2017, 06:03 PM

দাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সোমবার বিকালে এ সালিশ বৈঠক হয়।

শিশুটির মায়ের ভাষ্য, তার মেয়ে (৯) স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে তাকে বাড়ির পাশে একটি পাটক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে দাঁদপুর ইউনিয়নের নাগদী গ্রামের খলিলুর রহমান (৪০)।

শিশুটির চিৎকারে তার মাসহ এলাকাবাসী গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।

মা আরও বলেন, তালের শাঁস খাওয়ানোর কথা বলে একটি পাটক্ষেতে নিয়ে তার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন খলিলুর। মেয়ের চিৎকার শুনে তিনি সেখানে গিয়ে মেয়েসহ খলিলকে দেখতে পান। পরে খলিল তার হাতেপায়ে ধরে মাফ চান এবং এ ঘটনা কাউকে না জানাতে অনুরোধ করেন।

পরে বিষয়টি তিনি স্থানীয় ইউপি চেয়রম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে তারা সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন।

তিনি বলেন, সোমবার বিকাল ৫টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠকে ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার তৈয়ব মাতুব্বর, জাফর মাতুব্বর, আমীন মাতুব্বর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তবে খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন না। তার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সৈয়দ আলী।

মেয়েটির মা বলেন, সালিশে খলিল থেকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ওই টাকা থেকে তাদেরকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয় এবং বাকি টাকা পরে দেওয়ার কথা জানানো হয়।  

এদিকে ‘শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার কোনো ঘটনা ঘটেনি’ দাবি করে দাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, দুই পরিবারের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধের কারণে এ অভিযোগ আনা হয়েছে।

জরিমানা আদায় করার বিষয়ে তিনি বলেন, “তালের কুই (শাঁস) খাওয়া নিয়ে খলিল ওই শিশু ও তার মাকে গালাগাল করেছেন বলে তাকে জরিমানা করা হয়।

বোয়ালমারী থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ধর্ষণ বা ধর্ষণ চেষ্টার বিষয়টি সালিশে মীমাংসা যোগ্য নয়।

“ঘটনাটি জানার পর আমি ইউপি চেয়ারম্যানকে ফোন করেছিলাম। তিনি (ইউপি চেয়ারম্যান) বলেছেন এ জাতীয় কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব।”