প্রাণের আম সংগ্রহ শুরু

চলতি মৌসুমে ৬০ হাজার মেট্রিক টনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণের আম সংগ্রহ ও পাল্পিং কার্যক্রম চলছে।

নাটোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2017, 02:55 PM
Updated : 8 June 2017, 03:18 PM

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আমচাষিদের কাছ থেকে এসব আম ক্রয় শুরু হয়েছে গত ১৯ মে। আমের সরবরাহ থাকা পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার নাটোরের একডালায় প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের কারখানায় স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কারখানার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হযরত আলী এ তথ্য জানান।

হযরত আলী বলেন, ফ্যাক্টরিতে আম প্রবেশের সময় কোয়ালিটি কন্ট্রোলার দ্বারা আম পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তা গ্রহণ করা হয়। প্রথমে আমগুলো পাকা কি-না তা দেখা হয়। পরে পোকা-রোগ মুক্ত এবং পচা কিনা তা পরীক্ষা করা হয়। এরপর ল্যাবে পাঠানো হয় বিভিন্ন রাসায়নিকের উপস্থিতি পরীক্ষার জন্যে।

“আম নেওয়ার সময় আরেকটি বিষয় দেখা হয়; তা হলো ওজন। ল্যাব টেস্টে উত্তীর্ণ হলেই কেবল তা কারখানায় প্রসেসের জন্যে নেওয়া হয়।”

তিনি বলেন, এই আমগুলো ফ্যাক্টরিতে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্রাসিং করে পাল্প সংগ্রহ করে তা অ্যাসেপটিক প্রযুক্তিতে সংরক্ষণ করা হয়। এই পদ্ধতির সুবিধা হলো হিমায়িতকরণ ছাড়া কমপক্ষে এক বছর পাল্প নিরাপদ, তাজা ও স্বাদ অক্ষুণ্ন রাখা যায়।

এই পাল্প থেকে ম্যাংগো ড্রিংক, ম্যাংগো বার ও জেলিসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তৈরি করা হয়। এছাড়া কাঁচা আম থেকে বিভিন্ন ধরনের আচার তৈরি হয়। প্রাণের এসব পণ্য এখন বিশ্বের ১৩৪টি দেশে নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে বলে জানান হযরত আলী।

হযরত আলী আরও জানান, নাটোরে প্রাণের কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে ওঠার কারণে কারখানায় সরাসরি প্রায় সাত হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। আমের মৌসুমে বাড়তি আরও দুই থেকে তিন হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এসব শ্রমিকের প্রায় ৯০ ভাগ নারী। এছাড়াও কারখানায় আমচাষি ও সরবরাহকারীদের প্রতিষ্ঠানে পরোক্ষ কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়।

প্রাণ এগ্রো বিজনেস লিমিটেডের কন্ট্রাক্ট ফার্মিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মো. কামরুজ্জামান জানান, নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, দিনাজপুর ও সাতক্ষীরায় প্রাণের প্রায় ১৫ হাজার চুক্তিবদ্ধ আমচাষির কাছ থেকে আম সংগ্রহ করা হয়।

প্রাণের কৃষি হাবের মাধ্যমে এসব আমচাষিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, স্বল্পমূল্যে উন্নতজাতের চারা প্রদানসহ সার-কীটনাশক ব্যবহার, রোপন প্রক্রিয়া ও গাছ থেকে আম সংগ্রহ সম্পর্কে প্রাণ এগ্রো বিজনেস লিমিটেডের অভিজ্ঞ ফিল্ড সুপারভাইজারদের মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে কামরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চাষিদের উৎপাদিত টক আম কেনার জন্য সাধারণ বাজারে ক্রেতা পাওয়া যায় না। অনেক সময় তারা এসব আম ফেলে দিতে বাধ্য হন। অথচ প্রাণ এসব আম ন্যায্য মূল্য দিয়ে কিনছে। এতে একদিকে চাষিরা যেমন লাভবান হচ্ছেন, তেমনি টক আম সংরক্ষণ করা সহজ হওয়ায় তা ব্যবসায়িকভাবেও লাভজনক হচ্ছে। 

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হেড অব মিডিয়া সুজন মাহমুদ, অ্যাসিস্টেন্ট জেনারেল ম্যানেজার (পিআর) জিয়াউল হক ও প্রাণ এগ্রো লিমিটেড কারখানার সিনিয়র ম্যানেজার (অ্যাডমিন) আব্দুল কাদের সরকার।