বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে এ ঘটনা ঘটে। বাবা ও মেয়েকে মাগুরা সদর হাহপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সজীব মোল্লাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গাঙ্গনালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পাশ করা এই ছাত্রীর মা সাংবাদিকদের বলেন, ৮ম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে এলাকার সজীব মোল্লাসহ একদল বখাটে তার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। স্কুলে যাতায়াতের সময় প্রতিনিয়ত অশ্লীল প্রস্তাব দিয়ে এসেছে। তারা একাধিকবার তার মেয়ের হাত ও ওড়না ধরে টানাটানি করেছে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সজীব ও নাজমুলের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তার মেয়েকে তুলে নিতে তাদের বাড়িতে চড়াও হয়। এ সময় তারা তাদের বাধা দিলে গেলে সন্ত্রাসীরা প্রথমেই তার স্বামীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা, কপাল, পিঠ, দুই হাতসহ বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করে। এক পর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
পরে হামলাকারীরা মেয়েকে তুলে নিতে গেলে তিনিসহ পরিবারের সদস্যরা তাকে জাপটে ধরে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা চাপতি দিয়ে তার মেয়ের পিঠে কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়, বলেন মেয়েটির মা।
পরে গ্রামবাসী তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
তিনি বলেন, ওই সময় এ ঘটনায় তিনি তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছিলেন। মামলা করার পর সদর উপজেলার আঠারখাদা ইউনিয়ন পরিষদে বসে চেয়ারম্যান অমরেশ বিশ্বাস, স্থানীয় তারেক কাজী ও মিন্টু চৌধুরীসহ এলাকার কয়েকজন তাকে আশ্বাস দেন যে মামলা তুলে নিলে ভবিষ্যতে আর ঝামেলা করবে না তারা।
কিন্তু এরপর মামলা তুলে নিলে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে বলে জানান ওই ছাত্রীর বাবা।
বৃহস্পতিবার রাতে ৭-৮ জন সন্ত্রাসী বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রসহ তার মেয়েকে তুলে নিতে তার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় বাধা পেয়ে তারা তাকে ও তার মেয়েকে কুপিয়ে জখম করে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
সন্ত্রাসীদের পক্ষে কিছু লোক এখনও তাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এ কারণে তাদের পুরো পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, বলেন ছাত্রীর বাবা।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, হামলায় আহত ছাত্রী পিঠে ব্যান্ডেজ নিয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। তার চোখে মুখে আতংকের ছাপ। অপরিচিত মানুষ দেখলেই ভয়ে আঁতকে উঠছেন।
মাগুরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মমতাজ মজিদ বলেন, শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে বাবা-মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হোসেন আল মাহবুব জানান, পুলিশ মূল অভিযুক্ত সজীবসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার তদন্ত ও অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।