হাত-চোখ সব সময় বেঁধে রাখা হত: ইকবাল

সাত মাস আগে ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকা থেকে ‘তুলে নেওয়া’ চিকিৎসক মুহাম্মদ ইকবাল মাহমুদ লক্ষ্মীপুরে ফিরে বলেছেন, সব সময় তার চোখ ও হাত বেঁধে রাখা হত।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিসাইফুল তসলিম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 June 2017, 07:10 AM
Updated : 1 June 2017, 07:10 AM

বৃহস্পতিবার সকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “খাওয়ার সময় খুলে দেওয়া হলেও অন্য সব সময় আমার হাত-চোখ বেঁধে রাখা হত।

“তবে এই দীর্ঘ সময়ে তারা কোনো নির্যাতন করেনি বা কোনো বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করেনি।”

গত বছর ১৫ অক্টোবর ঢাকা থেকে নিখোঁজের পর বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইকবালকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ঢাকা-রায়পুর সড়কের পাশে কোনো এক জায়গায় ফেলে যাওয়া হয় বলে তার বাবার ভাষ্য।

ইকবাল বলেন, পরে তিনি একটি অটোরিকশায় করে লক্ষ্মীপুর শহরে মাদারল্যান্ড হাসপাতাল ভবনের বাসায় ফেরেন।

তবে তারা কারা সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।

তিনি বলেন, “আসলে তারা আমার চোখ বেঁধে নিয়ে যায়। আবার চোখ বেঁধে নামিয়ে দিয়ে যায়। এর আগে বারবার ছেড়ে দেওয়ার জন্য কান্নাকাটি করলেও তারা সাড়া দেয়নি।

“কেন আমাকে আটকে রেখেছেন জিজ্ঞেস করলে তারা শুধু চুপ থাকতে বলত।”

ঠিকমতো খাবার দেওয়া হত কিনা সে বিষয়ে তিনি বলেন, “যা দিত তাতেই আমি সন্তুষ্ট ছিলাম। আল্লার কাছে শুকরিয়া যে আমি আবার আপনাদের মাঝে ফিরে এসেছি।”

ইকবাল মাহমুদ ২৮তম বিসিএস পাস করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে কাজ শুরু করেন। সেখান থেকে তিনি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে বদলি হলেও তার স্ত্রী-সন্তানরা লক্ষ্মীপুরেই ছিলেন। তার স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। 

দুই মাসের প্রশিক্ষণের জন্য গত বছরের ১০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন ইকবাল। এর মধ্যে ছুটিতে বাড়ি থেকৈ ঘুরে এসে ঢাকায় ফেরার পর ১৫ অক্টোবর সায়েন্স ল্যাবরেটরির মোড়ের কাছে ধানমন্ডি ১ নম্বর সড়কের মাথা থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয়।

ঘটনাস্থলের কাছে একটি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় ইকবালকে ধরে নেওয়ার সেই দৃশ্য ধরা পড়ে, যা পরে সংবাদমাধ্যমেও আসে।

সেখানে দেখা যায়, রাত ৩টা ১০ মিনিটের দিকে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা রুটের রয়েল কোচ থেকে নামার পরপরই সাত-আটজন ডা. ইকবালকে ঘিরে ধরে এবং তাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চলে যায়। মাইক্রোবাসের পেছনে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানও যেতে দেখা যায়।