র্যাব-১৩-এর নাটোর ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন জানান, মঙ্গলবার উপজেলার আগ্রাণ উচ্চবিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
আটকের কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “যারা আটক করেছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।”
এ বিষয়ে র্যাব-১৩-এর নিয়ন্ত্রণকক্ষে মঙ্গলবার বিকালে ফোন করলে নাম না জানিয়ে এক ব্যক্তি বলেন, র্যাবের কোনো দল নাটোরে যায়নি। তবে রাত পৌনে ৮টার দিকে নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে ল্যান্স কর্পোরাল শফিক বলেন, নাটোর থেকে এক ছাত্রকে তাদের কার্যালয়ে নিয়ে আসার কথা শুনেছেন। আর কিছু তিনি জানেন না।
পরে রাত ১১টার দিকে তিনি বলেন, জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতা থাকার সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক ছাত্রকে আটক করা হয়েছে।
আগ্রাণ উচ্চবিদ্যালয় শিক্ষকরা বলছেন, প্রায় এক মাস আগে দুই লোক নিজেদের একটি উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মী পরিচয় দিয়ে বিদ্যালয়ে আসে। তারা বিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দেওয়া হবে বলে জানায়।
সহকারী শিক্ষক তাহের সিদ্দিকী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে এক ব্যক্তি ফোন করে জানান, তারা উপবৃত্তির বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বিদ্যালয়ে আসছেন। বেলা ১টার দিকে সাদা মাইক্রোবাসে চারজনের একটি দল আসে।
“তারা প্রথমেই ওই ছাত্রের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করে। একপর্যায়ে তারা তার মোবাইল ফোন নিয়ে নেয় এবং নানা প্রশ্ন করে। এরপর তারা তাকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চলে যায়।”
যাওয়ার আগে তারা র্যাবের পরিচয়পত্র দেখায় বলে জানান বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
তাহের বলেন, “অগন্তুক চারজনের একজন নিজেকে মেজর বলে পরিচয় দিয়ে বলেছেন, ‘ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। এক মাস ধরে তার মুঠোফোনে আড়ি পাতা হয়েছে’।”
প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান বলেন, “বিষয়টি ইউএনও এবং ওসিকে জানিয়েছি।”
শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রধান শিক্ষকের কাছে একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে যায় ওই দলের সদস্যরা। সেই নম্বরে ফোন করলে এক ব্যক্তি নিজেকে র্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে বলেন, জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ তদন্ত করতেই তাকে আটক করা হয়েছে।
তবে তাকে কোথায়, কী অবস্থায় রাখা হয়েছে তা তিনি বলেননি।
ছাত্রের বাবা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ছেলে অনেকটা তোতলা। সে ঠিকমতো কথা বলতে পারে না। স্কুল থেকে তাকে কারা নিয়ে গেল, স্থানীয় প্রশাসন তা জানল না।
“বড়াইগ্রাম থানা ও ইউএনওর কার্যালয়ে যোগাযোগ করলাম। তারা কেউ কিছু জানে না। আমরা চরম উদ্বিগ্ন।”
তিনি দ্রুত তার ছেলেকে উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি শাহরিয়ার খান ও উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) ইশরাত ফারজানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।