স্বাভাবিক হয়ে আসছে উপকূল

দীর্ঘ সময়ের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আর আতঙ্কের পর আবার শান্ত হয়ে আসছে উপকূলীয় আবহাওয়া। বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2017, 09:00 AM
Updated : 30 May 2017, 10:10 AM

গত ২৬ মে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার পর ২৮ মে সকালে তা নিম্নচাপে এবং মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়। নাম দেওয়া হয় মোরা।

সোমবার মোরা বাংলাদেশ উপকূলের ৩০৫ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ‘মহাবিপদ সংকেত’ দেখাতে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতির বাতাস নিয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে চট্টগ্রামের দিকে রওনা হয় ঘূর্ণিঝড়টি।

বেলা ১টার দিকে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে ওঠে উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা। কোথাও কোথাও দেখা দেয় চিকচিক রোদ। সোমবার রাতে আসার পর আশ্রয়কেন্দ্র থেকে আবার বাড়ি ফিরতে শুরু করে লোকজন। কোথাও কোথাও জেলেরা মাছ ধরতে শুরু করেছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।

কক্সবাজার

মাইকে ঝড়ের খবর শুনে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন কুতুবদিয়া পাড়ার আবদুল জলিল, চরপাড়ার ছেনোয়ারা বেগম, সমিতি পাড়ার মো. হালিমসহ অনেকে।

হালিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঝড় চলে গেছে। আমরাও চলে যাচ্ছি।”

অবশ্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়েল নিয়ন্ত্রণ কক্ষের প্রধান ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম বলছেন, এখনও তারা বাড়ি ফেরার অনুমতি দেননি। তার পরও কেউ কেউ চলে যাচ্ছে।

সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন বলেন, ভয় ও আতঙ্ক থাকলেও কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। সকাল ৯টার পরই সূর্যর দেখা মেলে। বাতাসের তীব্রতাও ধীরে ধীরে কেটে যায়।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে আসা সবাই নিজেদের ইচ্ছামাফিক বাড়িতে ফিরে গেছে।

আকাশ খুব পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। তবে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি।

ভোলা

মোরা চট্টগ্রামের দিকে চলে যাওয়ার খবর পেয়ে অনেক জেলে মাছ ধরতে শুরু করেছে। ভোলা সদরে মেঘনা নদীর তীরে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কিছু জেলে ছোট ছোট নৌকায় নদীতে মাছ ধরতে নেমেছে।

ঝালকাঠি

জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক জানিয়েছেন, সোমবার রাতে জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে শ তিনেক লোক আশ্রয় নেয়। সকালে তারা ফিরে গেছে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো এখনও খোলা আছে।

ঝালকাঠিতে সকাল থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। দূরপাল্লার কোনো নৌযান না চললেও ছোট ছোট খেয়ানৌকা চলতে দেখা গেছে।

বাগেরহাট

সোমবার রাতে জেলার ২৩৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩৪ হাজার মানুষ এলেও মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়ার উন্নতি হতে শুরু করলে ফিরে যায় তারা, জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস।

কোথাও থেকে কোনো দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে মংলা বন্দরে এখনও পণ্য ওঠা-নামার কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন হারবার মাস্টার কমান্ডার মো. ওয়ালি উল্লাহ।