হল ছেড়েছে জাবি শিক্ষার্থীরা

সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ-ভাংচুরের প্রেক্ষাপটে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের বন্ধ ঘোষণার পর হল ছেড়ে গেছে শিক্ষার্থীরা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2017, 05:35 AM
Updated : 28 May 2017, 06:49 AM

শনিবার রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের রোববার সকাল ১০টার মধ্যে হল ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়।

সে অনুযায়ী, ছাত্রদের সাতটি এবং ছাত্রীদের আটটি হল থেকে রোববার ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যাগ হাতে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। নতুন করে বিশৃঙ্খলা এড়াতে ক্যাম্পাসে দেখা যায় বাড়তি পুলিশ।

এদিকে হল খালি করে দেওয়ার আকস্মিক এই নির্দেশে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যায়ন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র  মো. রফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগামী ৩ জুন থেকে ফাইনাল পরীক্ষার শুরু হওয়ার কথা। এ সময় হল বন্ধের সিন্ধান্ত আমাদের জটিলতায় ফেলে দিল।”

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, তারা হল বন্ধের এই সিদ্ধান্ত বদলাতে উপচার্যের সঙ্গে কথা বলবেন।

সরকার সমর্থক এ সংগঠনের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে হল বন্ধের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানাতে উপাচার্যের কাছে যাব।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নাজমুল হাসান রানা এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরাফাত শুক্রবার ভোরে সাভারের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাসের ধাক্কায় নিহত হলে ওইদিন দুপুরে এক ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় তাদের সহপাঠীরা।

এরপর নিহতদের লাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে না এনে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দোষারোপ করেন। শনিবার দুপুর থেকে তারা ফের মহাসড়কে অবস্থান নিলে বিকালে পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়ে ও লাঠিপেটা করে তাদের সরিয়ে দেয়।

সে সময় সাতজন শিক্ষার্থীসহ অন্তত আটজন আহত হন। তাদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এদিকে অবরোধের মধ্যেই ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি জুয়েল রানা ও সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

বিকালে পুলিশের হস্তক্ষেপে আন্দোলনকারীরা রাস্তা ছেড়ে দিলেও পরে উপাচার্যের বাসভবনের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে ভাংচুর চালায়।

এর মধ্যেই উপাচার্য সিন্ডিকেট সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। সিন্ডিকেটের সভা শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষকরা বেরিয়ে এলে পুলিশ উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে থাকা ১০ ছাত্রীসহ আন্দোলনকারী ৪২ শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।