জাবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ, পুলিশের টিয়ারশেল, লাঠিপেটা

সড়ক দুর্ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র নিহতের প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের টিয়ারশেল ছুড়ে ও লাঠিপেটা করে হটিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2017, 11:58 AM
Updated : 27 May 2017, 12:02 PM

শনিবার বেলা পৌনে ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে তারা অবরোধ করেন।

বেলা সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ তাদের সরানোর পর যান চলাচল শুরু হয়।

শুক্রবার ভোরে সাভারের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাসের ধাক্কায় নিহত হন জাবির মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান রানা ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত।

তাদের লাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে জানাজার জন্য না এনে বাড়ি নিয়ে যাওয়ায় তাদের সহপাঠীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দোষারোপ করছেন।

এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরেই এক ঘণ্টার জন্য রাস্তা অবরোধ করে রেখেছিলেন নিহতের সহপাঠী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুর থেকে কয়েকটি দাবি নিয়ে ফের মহাসড়কে নামেন তারা।

এর আগে ঢাকা-আরিচা সড়ক অবরোধের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের শান্ত করে মহাসড়ক ছেড়ে দেওয়ার জন্য কয়েকদফা কথা বললেও শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরাতে পারেননি তারা।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন সাংবাদিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ সময় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি জুয়েল রানা ও সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্র শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। দৈনিক ডেসটিনির জাবি প্রতিনিধি আবু সায়েমকেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মারধর করেন তারা।

বেলা ২টার দিকে অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যান উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। এসময় ‘আমার ভাইয়ের জানাজা, ক্যাম্পাসে কেন হলো না’, ‘আমার ভাই মরল কেন প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি নানা ধরনের স্লোগানে ক্ষোভ জানায় শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি গেইটে পুলিশ চেক পোস্ট বসানো, জয় বাংলা (প্রান্তিক) গেটে ৭দিনের মধ্যে ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণ কাজ শরু করা, আজকের মধ্যেই পর্যাপ্ত স্পিড ব্রেকার নির্মাণ, গতি সীমা নির্দিষ্ট করা, নিহত শিক্ষার্থীদের আত্মীয়দের যোগ্যতা অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি প্রদান, নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন অবরোধকারী শিক্ষার্থীরা।

উপাচার্য দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন এবং শিক্ষার্থীদের তুলে ধরা লিখিত দাবির কাগজে স্বাক্ষর করেন।

কিন্তু এরপরও রাস্তা থেকে সরে না গিয়ে আজকের মধ্যেই স্পিড ব্রেকার নির্মাণসহ দাবিগুলো পুরণের নিশ্চয়তা চেয়ে রাস্তা আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগেও বিভিন্ন দুর্ঘটনায় এরকম আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন শুরু হলেই কেবল তারা রাস্তা ছাড়বেন তারা।

পরে বেলা সোয়া ৫টার দিকে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালানোর কথা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ‍সভাপতি জুয়েল রানা অস্বীকার করেছেন।