ডাচবাংলা ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এ টাকা তাদের দেওয়া হয়।
সদরের মজিদা খাতুন সরকারি মহিলা কলেজ, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ জেলার একাধিক কলেজের ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এ বিড়ম্বনার শিকার হন।
বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কলেজ, ডাচবাংলা ব্যাংক ও শিক্ষা অফিসে জানানোর পরও সমাধান হয়নি।
লালমনিরহাট ডাচবাংলা ব্যাংক থেকে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘হায়ার সেকেন্ডারি স্টাইপেন্ড প্রজেক্টের’ (এইচএসএসপি) দেওয়া তালিকা অনুযায়ী লালমনিরহাটের বিভিন্ন কলেজের ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের উচ্চমাধ্যমিকের দুই হাজার ৩৬৬ জন শিক্ষার্থী উপবৃত্তির টাকা পাওয়ার জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত হন।
এর মধ্যে পাটগ্রামে ৩৮৫ জন, হাতীবান্ধার ৩৫৭ জন, কালীগঞ্জের ৫৫৫ জন, আদিতমারীর ৪১৪ জন ও লালমনিরহাট সদরের ৬৫৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
সরকার ‘ডাচবাংলার মোবাইল ব্যাংকিং’ সেবার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে উপবৃত্তির টাকা পাঠানোর চুক্তি করে। সেমতে ডাচবাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা মন্ত্রণালয়ের এইচএসএসপি কর্তৃপক্ষের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী ২ হাজার ২৬৭ জন শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোনে তিন দফায় ৪ কিস্তির টাকা পাঠিয়ে দেয়।
কিন্তু লালমনিরহাট সদর উপজেলার মজিদা খাতুন সরকারি মহিলা কলেজ ও আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা স্কুল অ্যান্ড কলেজেসহ জেলার বিভিন্ন কলেজের ৯৯ জন শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন নম্বরের একটি করে ডিজিট (সংখ্যা) ভুল থাকায় দুই কিস্তির টাকা পাননি।
মহিষখোচা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতুন ফেরদৌসি উপবৃত্তির টাকা পাওয়ার জন্য লিখিতভাবে আবেদন করেও কোনো সুরাহা পাননি বলে জানান।
মজিদা খাতুন সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সাবরিনা প্রধান ও আনোয়ারা বেগমও টাকা না পাওয়ায় আবেদন করেছেন বলে জানান।
উপবৃত্তির টাকা না পাওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, দুই দফায় ২৭শ করে টাকা পেলেও এবার মোবাইল নম্বর ভুলের কারণে টাকা পাচ্ছেন না বলে জানান।
মহিষখোচা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সরওয়ার আলম বলেন, “আমার কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতুন ফেরদৌসির মোবাইল ফোনের একটি ডিজিট ৮ (আট) এর স্থলে ০ (শূন্য) হয়েছে। এ কারণে সে টাকা পায়নি।”
বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এইচএসএসপি কর্তৃপক্ষকে তা সংশোধনপূর্বক তালিকা পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
ডাচ বাংলা ব্যাংকের লালমনিরহাট শাখা ব্যবস্থাপক মামুনুর রশীদ বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো তালিকায় ভুল থাকার কারণে লালমনিরহাটের বিভিন্ন কলেজের মোট ৯৯ জন শিক্ষার্থী উপবৃত্তির টাকা পায়নি।
“তবে সংশোধনী তালিকা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আসলে আমরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে টাকা পাঠাব। মোবাইল ফোনের ডিজিট সংশোধন না করা হলে আমার কিছু করার নেই।”
লালমনিরহাট মজিদা খাতুন সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক রবিন্দ্র নাথ চক্রবর্তী বলেন, “আমার কলেজের দুই শিক্ষার্থী উপবৃত্তির প্রথম ও দ্বিতীয় দফার টাকা ডাচবাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই পেয়েছে। কিন্তু একই শিক্ষার্থী ততৃীয় ও চতুর্থ দফার টাকা পায়নি।”
তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে মোবাইল ফোন নম্বর ভুল হওয়ার কারণে তাদের টাকা পাঠাতে পারছে না ডাচবাংলা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট এইচএসএসপি প্রকল্প বরাবর কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু আশরাফ নূর বলেন, “জেলার প্রত্যেক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে কেউ ব্যর্থ হলে আমাকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”